একদিকে কর্তৃত্ববাদী ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালী পার্টির নেতা মেরিন লি প্যান, অন্যদিকে গত ৫ বছর ধরে দেশকে শাসন করা উদারপন্থী লা রিপাবলিকা এন মার্শ পার্টির নেতা ইমানুয়েল ম্যাকরণ-এই দুই জনের মধ্যে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিতে হবে ফ্রান্সবাসীকে। এ লক্ষে আজ রোববার (২৪ এপ্রিল) ভোটাভুটি হবে ফ্রান্সে। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২ টায় ফ্রান্সে এ ভোটাভুটি শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহণ চলবে ১২ ঘন্টা। নির্বাচনের ফল যাই হোক, আইফেল টাওয়ারের পাদদেশ থেকে আজ ভোটারদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন ম্যাকরণ।
মূলত ম্যাকরণ এবং লি প্যান-এই দুই প্রার্থীর কাউকেই যারা ১০ এপ্রিলের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোট দেননি, ওই ভোটাররাই নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করে দেবেন। তাই এখন যারা সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন, তাদের আস্থায় আনতেই এতোদিনের প্রচারণায় দুই প্রার্থী চেষ্টা করেছেন। নির্বাচনকে আরও পরিষ্কার ভাষায় বললে, ইউরোপীয় ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী ম্যাকরণ এবং একজন জাতীয়তাবাদি নেতা লি প্যান যিনি এরইমধ্যে অভিবাসন ও মেয়েদের স্কার্ফ পরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেবেন, এমন কথা বলে সমালোচনায় পড়েছেন-এই দুই জনের মধ্যে।
কিছুটা গণভোটের মত আয়োজিত এ ভোটাভুটিতে ফ্রান্সের ৪ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ভোটার তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। ফ্রান্সবাসী সিদ্ধান্ত নেবেন, ম্যাকরণকে কি আরও ৫ বছর ক্ষমতায় রাখবেন, নাকি তার জায়গায় দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে লি প্যানকে বেছে নেবেন। জরিপগুলো বলছে, লি প্যান তার থেকে ৯ বছরের জুনিয়র ম্যাকরণ থেকে ১০টি দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছেন। ম্যাকরণের সমালোচকরা ম্যাকরণকে ডাকেন দাম্ভিক হিসেবে। ম্যাকরণকে বলা হয়ে থাকে ধনী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করা প্রেসিডেন্ট, যেখানে লি প্যানের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রাখার অভিযোগ রয়েছে। নেতাদের এ কর্মকান্ডগুলোর কোনটাই ফ্রান্সের অধিকাংশ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবর্তনের অঙ্গীকার দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ম্যাকরণ, যদিও সে পরিবর্তনের ছোয়ার দেখা এখনো পাননি ফ্রান্সের মানুষ। এরমধ্যে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ম্যাকরণের জনপ্রিয়তায় ভাটা ফেলেছে। অন্যদিকে মেরিন লি প্যান প্রথমবারের কিছু ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও পরিপক্ক হয়েছেন। ভোটারদের বলেছেন, জয়ী হলে শুরুতেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম টানবেন।
এইবার নিয়ে তিনবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ছেন লি প্যান। তবে এবার হারলে এটাই তার রাজনৈতিক জীবনে প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ের শেষ সুযোগ হবে।