ফ্রান্সে কিশোরের মৃত্যু

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ৪৫ হাজার পুলিশের সাথে সাঁজোয়া যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলাই ১, ২০২৩, ০৭:৪৩ পিএম

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ৪৫ হাজার পুলিশের সাথে সাঁজোয়া যান

সংগৃহীত ছবি

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নাহেলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের শুরু হয়। যতই দিন যাচ্ছে বিক্ষোভ আরও জোরালো হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ দমনে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে ফ্রান্স। পাশাপাশি সাঁজোয়া যানও নামিয়েছে দেশটি।

শুক্রবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল টিএফ ওয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন। 

তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি এবং প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরের হালনাগাদ তথ্য রাখছি।’

সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে যাচ্ছে কি না— এ প্রশ্নের উত্তরে দারমানিন বলেন, ‘একদম স্পষ্টভাবে বলতে গেলে আমি বলব, আমরা কোনো সম্ভাব্য সমাধান এড়িয়ে যেতে চাইছি না। সামনের কয়েক ঘণ্টা আমরা দেখব, তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট যে পন্থা বেছে নেবেন, তা কার্যকর করা হবে।’

গতকাল শুক্রবার (৩০ জুন) দেশজুড়ে আরও দুই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, শুক্রবার দিনে ও সন্ধ্যায় দেশজুড়ে মোট ২৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মার্সেই শহর থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৮০ জনকে।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে তো-কোয়া শহরে আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে গতকাল ক্ল্যামার্ট শহরে ২৯ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়।

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে রাত ৯টার পর প্যারিস ও এর আশপাশে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সব ধরনের কনসার্ট বাতিল করেছে। 

বিক্ষোভের মধ্যেই লিয়ন এবং গ্রেনোবল শহরের বিভিন্ন দোকানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ভূমিকা না নেয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে চলমান এই বিক্ষোভ থামাতে অভিভাবকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার এবং সন্তানদের ঘরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। 

শুক্রবার (৩০ জুন) প্যারিসে মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘যারা বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে, তাদের অধিকাংশই বয়সে একেবারে তরুণ। অনেকেই এখনও প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি। সন্তানদের খোঁজখবর রাখা বাবা-মায়ের দায়িত্ব, রাষ্ট্রের নয়। আমি ফ্রান্সের অভিভাবকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি বিরাট ভূমিকা পালন করছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে প্যারিসের পশ্চিমে ন্যান্টা এলাকায় গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল এমকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। খবরে বলা হয়েছে, সড়কে পুলিশের নির্দেশ অমান্য করায় ওই কিশোরকে গুলি করা হয়।  এ ঘটনায় গত চার দিনে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২ হাজার ২০০-এর বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Link copied!