ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ০১:১৭ এএম
হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যবসায়ী আদম তমিজী হক অসংখ্য বিয়ে করেছেন জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেছেন, মানসিকভাবে অসুস্থ হলে আদম তমিজী হককে রিহ্যাবে পাঠানো হবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আদম তমিজীকে গ্রেফতারের পর রাতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। আদম তমিজীকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।
এদিকে ডিবি কার্যালয়ে ঢোকার সময় গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে আদম তমিজী হক বলেন, ‘আমাকে খুব রেসপেক্ট দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি ভেরি হ্যাপি উইথ দ্য গভমেন্ট অব বাংলাদেশ। আমাকে অনেক সম্মান দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’
তমিজীকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংলগ্ন কথা বলেছেন। মানসিকভাবে অসুস্থ হলে তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হবে। আর রাষ্ট্রকে হেয় করার উদ্দেশ্যে এসব করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাইবার নিরাপত্তা আইনে তমিজীর বিরুদ্ধে মামলা আছে জানিয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ খান থানায় মামলা আছে। আদম তমিজীর স্ত্রীরাও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। এসব কারণে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি।
হারুন বলেন,আদম তমিজীর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। হঠাৎ করেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে বলা শুরু করলেন তার মা হলেন হাফ ইসরাইল। ইসরাইল সরকারকে আহ্বান করেছেন তাকে উদ্ধার করতে। আবার আমেরিকাকে আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ সরকার তাকে আটকে রেখেছে, তাকে উদ্ধার করতে বলেছেন। বাংলাদেশ সরকার যদি তাকে গ্রেফতারই করত তাহলে তিনি যখন এয়ারপোর্ট দিয়ে আসলেন তখনই তাকে আটকাতে পারতাম। এয়ারপোর্ট দিয়ে এসে এমন পাগলামি করেছেন তিনি। তাছাড়া বাংলাদেশের পাসপোর্ট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখিয়েছেন। যে দেশে তার শিল্প কারখানা, যে দেশের শিল্প কারখানা দিয়ে তিনি চলেন, সেই দেশের পাসপোর্ট তিনি পুড়িয়ে ফেলেছেন। এটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। আনিছুর রহমান নাঈম নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় এ মামলাটি করেন।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে রাত ১১টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন আদম তমিজী। সে সময় তিনি ফেসবুকের এক পোস্টে হক গ্রুপ এবং শ্রমিক-কর্মীদের রক্ষায় দেশে ফিরেছেন বলে জানান। পরে ১৫ নভেম্বর তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।
সে সময় র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তমিজীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য ও সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরাফির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগও রয়েছে আলোচিত এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে একের পর ফেসবুক পোস্ট, লাইভ ও ভিডিও নিয়ে নেটজগতে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছিলেন আদম তমিজী হক। এছাড়াও ফেসবুক লাইভে এসে নিজের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলেন আদম তমিজী হক।