দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে জামিনে মুক্তি পেয়েই কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা করেন খাদিজা। উদ্দেশ্য পরীক্ষায় অংশ নেয়া।
রবিবার সন্ধ্যায় খাদিজার জামিন কাগজপত্র আসে বলে নিশ্চিত করে সোমবার (২০ নভেম্বর) কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কারাগার থেকে বেরিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে রওনা করেছেন খাদিজা।
জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার ভোরে কারামুক্তি সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পরে সকাল ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা আসলে খাদিজা কারাগার ত্যাগ করেন বলে জানান কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান মিয়া।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা পুনঃভর্তি নিয়ে ২০২০-২১ সেশনে পরীক্ষায় বসলেন। ১০টার দিকে পরীক্ষা শুরু হলেও কারাগার থেকে আসতে ১১টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সরাসরি পরীক্ষার আসনে বসেন খাদিজা। পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর একটায়। দ্বিতীয়
গত ১৬ নভেম্বর আপিল বিভাগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন। এর ফলে দুই মামলায় খাদিজাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকে। এর ধারাবাহিকতায় প্রায় এক বছর তিন মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি মিললো খাদিজার।
এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে ‘অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা’র অভিযোগে খাদিজাতুল কোবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।
‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। সেই ভিডিও দেখে এই মামলা করা হয়। নিউমার্কেট থানায় মামলার আট দিনের মাথায় কলাবাগান থানায় আরেকটি মামলা হয়।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।
অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট খাদিজাতুল কুবরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।