জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে তারেকের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ আগস্ট) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় তারেক রহমান ও জোবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৬(২) ধারার অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছর এবং ২৭(১) ধারায় অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর।
এ মামলায় গত ১৩ এপ্রিল পলাতক এ দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে আদালত বিচার শুরুর আদেশ দেন।
আয়ের সাথে সঙ্গতিহীন সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান এবং তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নামে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই মামলাটি হয়। তখন তারেক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
২০০৮ সালে তারেক জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর তিনি আর দেশে ফেরেননি।
তারেক বিদেশে থাকা অবস্থায়ই দেশে এই পর্যন্ত চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় তাঁর।
এর আগে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায় তাদের। ব্যানারে লেখা ছিল: ‘তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা মিথ্যা রায় মানি না, মানব না’। বেলা ১টার সময়ও আদালতের বাইরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভ চলছিল।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিটের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে আইনজীবীরা বলতে থাকেন– ‘ফরমায়েশি রায় মানি না’, ‘তারেক জোবায়দার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’।
উল্টোদিকে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা তারেক ও জোবায়দার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন আদালত প্রাঙ্গণে।
দুই পক্ষের আইনজীবীদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা পরিদর্শক হারুন অর রশিদ এবং প্রসিকউশন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. ফেরদৌস।
এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।