গাজীপুরে বৃষ্টিতে তলিয়েছে সব, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মানুষ

জাতীয় ডেস্ক

অক্টোবর ৬, ২০২৩, ১০:২০ পিএম

গাজীপুরে বৃষ্টিতে তলিয়েছে সব, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নয়াপাড়, ধামলই, গলদাপাড়া, নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের শত শত একর জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান খেতে থইথই পানি।

এক রাতের বৃষ্টিতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ভেসে গেছে শতাধিক মাছের খামার।  মাছ শিকারিরা বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। নষ্ট হয়েছে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট।

উপজেলার ধামলই গ্রামের বেশ কয়েকটি মাছের খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। উপজেলার নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের নদী ঘেঁষা ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার কাওরাইদ-বরমী সড়কের কালীনারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাসাবাড়ি দোকানপাট সিএনজি স্টেশনে পানি জমে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাটিরঘর ধসে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছে।

উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের এক কৃষক বলেন, ‘আমার তিন বিঘা আমন খেতে গলা সমান পানি। মানুষ মাছ শিকার করছে আনন্দে। আমার কলিজা ফেটে যাচ্ছে। যে পরিমাণ পানি ১৫ দিনেও যেতে পারবে না। ধান পানির নিচেই পচে নষ্ট হবে।’

কাওরাইদ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক বলেন, ‘আমাদের পরিবারের অন্তত ২০ বিঘা জমিতে প্রচুর পানি। ঢলের পানি গিয়ে ধানের চারা উঠে যাচ্ছে। সপ্তাহখানেক পানির নিচে থাকলে ধান সম্পূর্ণ পচে নষ্ট হয়ে যাবে।’

কাওরাইদ ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের মৎস্য চাষি  বলেন, ‘আমার মৎস্য খামার তলিয়ে গিয়ে অন্তত ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।’

একই ইউনিয়নের যোগিরছিট গ্রামের মৎস্য চাষি লিটন মিয়া বলেন, ‘আমার পুকুরের পাড় ভেঙে ৩ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।’

শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ‘আমি সকাল থেকে বিভিন্ন রাস্তায় খোঁজখবর নিচ্ছি। কয়েকটি সড়কে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া কালভার্ট ভেঙে যাওয়া ও সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বর্না প্রতিবেদনকে জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার অনেক জমির ফসল এখন পানির নিচে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। দীর্ঘ দিন ফসলি জমি পানির নিচে থাকলে ফসল পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে আমন ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।’

উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, অনেক মৎস্য খামার তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। তাতে ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, মাটির ঘরবাড়ি ভেঙে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রতিবেদনকে জানান, সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের প্রধানদের সার্বিক খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে।

Link copied!