১ জুন সংসদে পেশ হচ্ছে পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট

বিশেষ প্রতিনিধি

মে ৯, ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম

১ জুন সংসদে পেশ হচ্ছে পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট

আসছে জুলাইয়ে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ বছর জুনের শেষ তিনদিন ঈদের ছুটি থাকবে। তাই আগেভাগে শুরু করে বাজেট পাসের প্রক্রিয়া ঈদের আগেই করতে চায় সরকার।

আগামী পহেলা জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ ইংরেজি অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাজেট নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ লক্ষ্য নির্ধারণ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলে এটিই হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সংসদে উপস্থাপনের জন্য চূড়ান্ত বাজেট। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন।

এটি দেশের ৫২তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৪তম বাজেট। আকারের দিক থেকে এটিই হবে দেশের বৃহত্তম বাজেট। সর্বশেষ বাজেটের তুলনায় এর আকার হবে ১২ শতাংশ বেশি।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের জন্য এটি পঞ্চম বাজেট। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৯ জুন তিনি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন। ৩০ জুন চলতি অর্থবছর শেষ হচ্ছে।

প্রথা অনুযায়ী জুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। ৩০ জুন পাস হয় সেই বাজেট। ১ জুলাই থেকে শুরু হয় নতুন বাজেট বাস্তবায়ন।

আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আদায় করতে হবে ৪ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

কেমন হবে এবারের বাজেট?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রক্ষাপটে সৃষ্ট বৈশ্বিক ভূরাজনীতিক পরিস্থিতি, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ও আন্তর্জাতিক দ্রব্যমূল্য বাজার-সব মিলিয়ে এবারের বাজেট সরকারের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রপ্তানী আয় ও রেমিট্যান্সের প্রবাহ নিয়ে শঙ্কা, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বৈদেশিক ঋণ এবং কারিগরি সহায়তা নিয়ে এক অনিশ্চয়তা র মধ্যে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বাজেটের আগেই উন্নয়ন সহযোগী তিন দেশ ঘুরে একটা অনুকুল পরিস্থিতি সৃষ্টির যে চেষ্টা করেছেন তাও ইতিবাচক হিসেবে গণ্য করছেন সমালোচকরা।

তবে বাজেটে চাপ থাকবে নিজস্ব আয় অর্থাৎ রাজস্ব আয় বাড়ানো।

কারণ বাজেটের মূল্য লক্ষ্য উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক রেখে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া।

একই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপকারভোগী ও ভাতা বাড়ানোর মতো কর্মসূচি থাকছে।

বাজেটে আর্থিক খাত সংস্কার মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত দিক নির্দেশনাও থাকবে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

এদিকে, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের এটিই শেষ বাজেট। ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রী দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী সমাজের মতামত গ্রহণ করেছেন।

এসব বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এবারের বাজেট হবে জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী। তিনি বলেন, এর আগে কোভিড-১৯ বর্তমান সরকার সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন নতুন সঙ্কট। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়েছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, এ অবস্থায় সরকারও বিভিন্ন নীতিগত সহায়তা প্রদান করে ডলার সংকটসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও বাজেটে সরকারের পক্ষ থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ থাকবে। আশা করছি, সব ধরনের সংকট মোকাবিলা করে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।

Link copied!