সাধারণত প্রতিদিন অফিসের সময়সূচি থাকে ৮ থেকে ১০টার মতো। এ সময়ের মধ্যে কয়েকবার টয়লেটে যাওয়া স্বাভাবিক কিন্তু অফিসটাইমের ছয় ঘণ্টাই টয়লেটে কাটানো! বিশ্বাস করা যায়!
এই অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছে চীনে। দীর্ঘদিন ধরে ওয়াং নামে এক ব্যক্তি এই কাজ করেছেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ নিয়ে আবার আদালতেও গিয়েছিলেন ওই কর্মী। তাঁর অভিযোগ, অসুস্থতার জন্য টয়লেটে গিয়ে বিশ্রাম নিতেন তিনি। প্রতিষ্ঠান অন্যায়ভাবে তাঁকে বরখাস্ত করেছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোম্পানির পক্ষেই রায় দিয়েছে আদালত।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
২০০৬ সালের এপ্রিলে ওই কোম্পানিতে যোগ দেন ওয়াং। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি ‘মলদ্বারের সমস্যা’–এর কারণে চিকিৎসা করান। যে কারণে ঘন ঘন টয়লেটে যেতে হত তাঁকে। চিকিৎসায় সেরে উঠলেও ওয়াং দাবি করেন, এরপরও সব সময় ব্যথা অনুভব করতেন তিনি। এ কারণে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে প্রতিদিন তিন থেকে ছয় ঘণ্টা টয়লেটে কাটাতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে কোম্পানির রেকর্ড অনুসারে, ২০১৫ সালের ৭ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়াং প্রতিদিন তাঁর কাজের শিফটের সময় টয়লেটে দুই থেকে তিনবার গেছেন। এই ১১ দিনে তিনি ২২ বার টয়লেটে গেছেন। প্রতিবার ৪৭ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা সেখানে থেকেছেন।
একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর কোম্পানির কর্মচারী হ্যান্ডবুকে দেরিতে অফিসে আসা, সময়ের আগেই বেরিয়ে যাওয়া এবং ছুটি না নিয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয় উল্লেখ করে তাঁর সাথে চুক্তি বাতিল করে।
ওয়াং তখন অনির্দিষ্ট-মেয়াদি শ্রম চুক্তি অব্যাহত রাখা এবং তাঁকে চাকরিতে বহাল রাখার অনুরোধ জানিয়ে সালিশের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু আদালত রায়ে বলে, টয়লেটে তাঁর দীর্ঘ সময় থাকার পেছনে যুক্তিসংগত শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজন ছিল না। তাঁকে বরখাস্ত আইনসংগত এবং ন্যায্য হয়েছে।
এদিকে ওয়াংয়ের বরখাস্তের ঘটনা চীনা সোশ্যাল মিডিয়াতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। বেশির ভাগই অবশ্য নিয়োগকর্তাদের পক্ষেই বলেছেন।
একজন লিখেছেন, ‘দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের মধ্যে চার ঘণ্টাই শৌচাগারে কাটানো! কোন নিয়োগকর্তা এটা মেনে নেবে?’
আরেকজন লিখেছেন, ‘অসুস্থতা সহানুভূতি পাওয়ার যোগ্য, তবে এটিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি এই ধরনের কর্মচারীরা জয়ী হয়, তবে তো অফিসের টয়লেটগুলোতে ভিড় লেগে যাবে!’
‘এটা তো প্রাকৃতিক কর্ম সারার জন্য উল্টো টাকা দেওয়ার মতো ব্যাপার!’ এমন মজার মন্তব্য করেছেন একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী।