চাঁদে কি আসলেই জমি কেনা যায়?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০৪:২২ পিএম

চাঁদে কি আসলেই জমি কেনা যায়?

সম্প্রতি বউয়ের জন্মদিনে চাঁদের জমি উপহার দিয়ে আলোচনায় এসেছেন বাংলাদেশী এক যুবক। নিজ নামে চাঁদে জমি পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন বউও। কিন্তু ওই যুবক চাঁদে জমি কিনলেন কিভাবে? কার কাছ থেকে? চাঁদে আসলেই জমি কেনা যায়?

হ্যাঁ! চাঁদে জমি বিক্রি হচ্ছে। তবে…

৫ দশক আগে চাঁদের বুকে পাড়ি জামিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন নিল আর্মস্ট্রং ও বাজ অলড্রিন। তারপর আরো কয়েকজন পা রেখেছেন চাঁদের মাটিতে। এছাড়ও কয়েকটি দেশ তাদের মনুষ্যবিহীন চন্দ্রযান চাঁদে পাঠিয়েছে গবেষণার কাজে। তবে কেউই কিন্তু মালিকানা দাবী করেনি চাঁদের।

সম্প্রতি চাঁদে জমি কেনার হিড়িক পড়েছে দেশে। সর্বশেষ শনিবারেও (২৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির পিটারসেনে বসবাসকারী সিলেটি যুবক ৫৫ ডলারে  জমি কিনেছেন চাঁদে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনার এমডি অসীম নামের এক সাংবাদিক তার ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী ইসরাত টুম্পাকে চাঁদে জমি কিনে দিয়েছেন। এই খবর রীতিমতো ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। হচ্ছে ট্রল, হাস্যরস। তারও আগে ১৮ সেপ্টম্বের কানাডা প্রবাসী বাঙালি দম্পতি অখিল রায় ও অনুপা হালদার আমেরিকার ডেনিস হোপের ‘লুনার অ্যাম্বাসি’ থেকে জমি কিনেছেন বলে দাবি করেছিলেন। প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগেও সাতক্ষীরা জেলার দুই তরুণ চাঁদে জমি কিনে উঠে আসেন খবরের শিরোনামে। এসএম শাহীন আলম ও শেখ শাকিল হোসেন নামের ওই দুই যুবকই সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে চাঁদে জমি কেনা প্রথম গ্রাহক।  

এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবছেন, চাঁদে যখন সবাই জমি কিনে রাখছে তাহলে আপনিই বা একখণ্ড জমি কেন কিনে রাখবেন না? কিনলে তো আর মন্দ হয় না! তাহলে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে ডেনিস হোপের ওয়েবসাইট লুনার অ্যাম্বাসি ডট কমে। শুধু চাঁদ নয়, পৃথিবী বাদে সৌরমণ্ডলের যেকোনো গ্রহের জমি কিনতে পারবেন এখান থেকে।

ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে জমির নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করার পর আপনি চাঁদের যে অংশটি আপনি কিনলেন তার একটি স্যাটেলাইট ম্যাপ এবং জমি কেনার দলিল দেওেয়া হবে মেইলের মাধ্যমে।

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কে এই ডেনিস হোপ? সৌরজগতের সব গ্রহের জমি বিক্রির মালিকান তিনি কিভাবে পেলেন?

মার্কিন নাগরিক ডেনিস হোপ ১৯৮০ সাল থেকেই দাবি করে আসছেন, সৌরজগতের সব গ্রহগুলোর মালিক তিনি। তিনিই সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহরে জমি বিক্রির অধিকারী। তাই খুলে বসেছেন লুনার অ্যাম্বাসি ডট কম। বিক্রি করছেন চাঁদের জমি। তবে হোপ অন্য গ্রহের জমি বিক্রি করেছেন এমন খবর পাওয়া যায়নি।

বাস্তবতা হলো, জাতিসংঘের ‘আউটার স্পেস ট্রিটি’ অনুযায়ী, চাঁদে কেউ জমি কিনতে পারেন না। তারপরও বিভিন্ন দেশের কতিপয় দুষ্টুলোক চুক্তির ফাঁকফোকর বের করে চাঁদে জমি বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বিশাল  অঙ্কের টাকা। আর পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব নিশ্চয় ঢাকার ৬/৭/৮ নম্বর লোকাল বাসের দূরত্ব নয়। চাইলেও যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে যারা ডলার খরচ করে জমি কিনছেন তারা আসলে কি কিনছেন? একখণ্ড কাগজ আর তৃপ্তির ঢেকুর! শখের দাম আশি টাকা তোলা কিনা! তো কিনবেন চাঁদের জমি?

Link copied!