জুলাই ৮, ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আদালতে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা একজন আইনজীবী রেখে আদালতে তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন। আদালত তাঁদের বক্তব্য শুনে ন্যায্য রায় দেবেন।
আজ সোমবার বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন।
আন্দোলনের প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টে এ মামলার শুনানির সময় কোটার বিপক্ষে যাঁরা, তাঁদের কোনো আইনজীবী ছিল না। তাঁরা আদালতে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেননি। এখন মামলাটা আপিল বিভাগে গেছে। আপিল বিভাগে তাঁরা একজন আইনজীবী রেখে তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন। আপিল বিভাগ তাঁদের বক্তব্য শুনে বিবেচনা করতে পারেন।
২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা (পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা ও ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা। এ ছাড়া ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম ছিল। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে এক পর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল দেন আদালত। আর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট রায় (রুল অ্যাসলিউট বা যথাযথ) ঘোষণা করেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হয়ে ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আপিল বিভাগ নট টুডে (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়।
এদিকে হাইকোর্টের রায়ে পর থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংশোধনের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।