মানবদেহে বসছে মাইক্রোচিপ, অনুমতি পেলেন ইলন মাস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মে ২৭, ২০২৩, ০৬:২৭ পিএম

মানবদেহে বসছে মাইক্রোচিপ, অনুমতি পেলেন ইলন মাস্ক

সংগৃহীত ছবি

২০১৯ সাল থেকে মানবদেহে চিপ স্থাপনের কথা বলে আসছিলেন প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক। এবার তাঁর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন ব্রেইন-ইমপ্লান্ট কোম্পানি নিউরালিংক এবার বাস্তব জগতেই মানবদেহে মাইক্রোচিপ বসানোর অনুমতি পেয়েছে।  

গতকাল শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছ থেকে প্রথমবারের মতো ইন-হিউম্যান ক্লিনিক্যাল স্টাডি শুরুর অনুমোদন পেয়েছে নিউরালিংক।

মাইক্রোচিপের মাধ্যমে সিনেমার চরিত্রগুলো সাধারণ মানুষের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি তীক্ষ্ণ আর অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে গেলেও বাস্তবে সেটা কেমন হবে সেটাই দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব।

২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরই ইলন মাস্ক চিপ স্থাপনের কথা বলে আসছিলেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরই তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে। নিউরালিংক এরই মধ্যে শূকর ও বানরের মস্তিষ্কে সফলতার সঙ্গে মাইক্রোচিপ স্থাপন করেছে । ডিভাইসটি স্থাপন ও অপসারণ সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে দাবি নিউরালিংকের।

বানরের মস্তিষ্কে চালানো পরীক্ষাগুলোর চিপ এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, যা মগজে উৎপন্ন সংকেত ধরতে পারবে। সেই সংকেত ব্লু-টুথের মাধ্যমে হাঁটা বা দেখার জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসে চলে যাবে।

সংস্থাটি কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগ স্থাপন করে মানুষের দৃষ্টিশক্তি এবং গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে চায়। পাশাপাশি মাইক্রোচিপের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহারে সহায়তা করতে চায় সংস্থাটি।

ইলন মাস্ক ২০১৬ সালে নিউরোলিংক প্রতিষ্ঠা করেন।  ২০২০ সালের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কে চিপ লাগানেই এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল।  কিন্তু পরে এটি পিছিয়ে ২০২২ সালে নির্ধারণ করা হয়। তবে ওই বছরও কাজ করার অনুমতি পায়নি নিউরোলিংক।  ওই বছরের ডিসেম্বরে কথিত প্রাণী কল্যাণ লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্তের আওতায় আসার পরে তা পিছিয়ে যায়।

অনুমোদন পাবার পর নিউরালিংক টুইটারে জানায়, ‍‍`আমরা আমাদের প্রথম-মানবীয় ক্লিনিকাল স্টাডি চালু করার জন্য এফডিএর- অনুমোদন পেয়েছি। এটা আপনাদের জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ যা একদিন আমাদের প্রযুক্তিকে অনেক লোকের উপকার আসার পথ তৈরি করে দেবে।‍‍`

নিউরালিংক মাইক্রোচিপ কি?

নিউরালিংক একটি রোবোটিক সার্জিক্যাল টুল এবং একটি ইলেক্ট্রোড-লোডেড কম্পিউটার চিপ তৈরি করেছে যা মস্তিষ্কের পৃষ্ঠে বসানো হবে।এই প্রযুক্তিটি নিয়মিত আপডেট করা হবে বলে জানিয়েছেন ইলন মাস্ক।

মানুষের মধ্যে পণ্যটির ক্লিনিকাল অধ্যয়ন নিয়ন্ত্রক বা বাণিজ্যিক সাফল্য নিশ্চিত করে না। ইমপ্লান্ট করা ব্যক্তিদের প্রযুক্তিগত সুবিধা প্রদান এবং নৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার পাশাপাশি নিউরোলিংক এবং অন্যান্যরা নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য কিনা তা এফডিএর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে।

তবে পরীক্ষা ও গবেষণার লক্ষ্য সম্পর্কে বা কখন ট্রায়াল শুরু হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত না জানালেও ইলন মাস্ক তার এই প্রজেক্ট নিয়ে খুবই আশাবাদী। এই প্রযুক্তি একদিন স্থূলতা, অটিজম, বিষণ্নতা এবং সিজোফ্রেনিয়াসহ ওয়েব ব্রাউজিং এবং টেলিপ্যাথি সক্ষম করে এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ও নৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিউরোলিংককে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে।

Link copied!