বাংলাদেশের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ দলে সুযোগ পেলেন যারা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১, ০৭:২৭ পিএম

বাংলাদেশের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ দলে সুযোগ পেলেন যারা

বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ২৬ সদস্যের জাতীয় দল ঘোষণা করলেন নতুন অন্তরবর্তীকালীন কোচ স্প্যানিশ অস্কার ব্রুজোন। খুব একটা চমক নেই। নতুন মুখ কেবল নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি বনে যাওয়া ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসলে। দলে থাকলেও তার খেলা নির্ভর করছে ফিফার অনুমোদনের উপর। এই দল নিয়েই আশাবাদি অস্কার। তার কথায়, ‘সাফে আমরা ফাইনাল খেলতে চাই।’ একই সুর বাফুফের সহসভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ এবং ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপুর কণ্ঠেও। তবে ২৮ সেপ্টেম্বর সাফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে এখান থেকেও কমানো হবে তিনজনকে। ১-১৬ অক্টোবর মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত হবে সাফ চ্যাম্পিয়শিপের খেলা।

প্রায় তিন বছরের বেশি সময় জাতীয় দলের কোচ ছিলেন জেমি। সাফের দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় তিনি নিজ দেশে ফিরে গেছেন। এই যাওয়াই কি তার শেষ যাওয়া? কাজী নাবিলের কথায়, ‘আমরা তা এখনি বলছি না। অস্কার কেবল সাফের জন্য দায়িত্ব নিয়েছে। পরবর্তী কুয়েত ও শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিতব্য দু’টি টুর্নামেন্টের বিষয়ে আমরা পরে ভাববো।’ জেমির এই লন্ডন যাওয়াই হয়তো তার বাংলাদেশ অধ্যায়ের সমাপ্তি। আরো ১১ মাস বাফুফের সঙ্গে জেমির চুক্তি থাকলেও দুই পক্ষ হয়তো কিছু দিন পর যৌথ সমঝোতার মাধ্যমে চুক্তি বিচ্ছেদ করবে। তার সঙ্গে চলে গেছেন

ব্রিটিশ গোলকিপার কোচ লিস ক্ল্যাভলি। ফলে ইংল্যান্ড থেকে লিসকে আর মালেতে আনবে না বাফুফে। জেমির সহকারী স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস আগেই বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন করেছেন। জেমির পরিবর্তে দায়িত্ব নেয়া অস্কার তার পছন্দমতো কোচিং স্টাফ নিয়েছেন। বসুন্ধরা কিংসে তার সহযোগী মাহবুব হোসেন রক্সিকে জাতীয় দলেও সহকারী হিসেবে নিয়েছেন। গোলকিপার কোচও বসুন্ধরার নুরুজ্জামান নয়ন। ফিজিও এবং ফিটনেস কোচও লিগ চ্যাম্পিয়ন দলের।

বাংলাদেশ দল সাফে সেমিফাইনাল খেলেছে সর্বশেষ ২০০৯ সালে। এরপর টানা চার আসরের গ্রুপ থেকে বিদায়। এবার অবশ্য খেলার ফরম্যাট ভিন্ন। পাঁচ দল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলবে। রাউন্ড রবিন লিগ শেষে শীর্ষ দুই দল ফাইনাল খেলবে। তাই অস্কার সরাসরি ফাইনাল খেলার কথা না বললেও পরোক্ষভাবে ফাইনালে চোখ রাখছেন। আশার বানী শুনিয়ে কোচ বলেন, ‘এটা ঠিক যে টুর্নামেন্টে আমরা দ্বিতীয় সর্বনি¤œ র‌্যাংকিংধারী দল হিসেবে খেলব। শ্রীলংকা সবার পেছনে। এর পর আমরা। আমাদের প্রথম ম্যাচ শ্রীলংকার বিপক্ষে। তাদের হারানো সম্ভব।’ ১ অক্টোবর সাফের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা।

প্রথম ম্যাচে জিততে পারলে বাকি পথটা পরোক্ষভাবে দেখিয়ে দিলেন অস্কার, ‘নেপাল ও মালদ্বীপ বাংলাদেশের ফুটবলের সমকক্ষ। যদিও র‌্যাংকিংয়ে তারা এগিয়ে। এই দুই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিততেও পারে, আবার ড্রও করতে পারে। হারতেও পারে।’

অস্কারকে নিয়ে জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদের কথা, ‘তিনি একদম নতুন কোচ নন। বাংলাদেশেই রয়েছেন তিন বছরের বেশি সময়। জাতীয় দলে অধিকাংশই কিংসের খেলোয়াড়। বাকি যারা রয়েছে তাদেরকেও তিনি ভালোভাবেই চেনেন। তার কাছে আমার প্রত্যাশা, ফিফটি-ফিফটি ম্যাচগুলো তার অভিজ্ঞতা, মনোবাসনা দিয়ে আমাদের অনুকূলে ফলাফল বয়ে আনবেন।’ 

জেমির মাধ্যমে ভালো ফলাফল আসছিল না। তাই অস্কারের শরণাপন্ন হয়েছে বাফুফে। অস্কারের হাতে মাত্র এক সপ্তাহ সময়। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে অস্কার বাস্তববাদী হয়ে বলেন,‘কোচের পদে আমার নাম ঘোষণা পর থেকেই অনেকেই মন্তব্য জানতে চেয়েছে। বাফুফে ও কিংস উভয়ের সঙ্গে আমার দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। বাফুফে ফলাফলে পরিবর্তন চায়। আমি পরিবর্তন এবং নতুন কিছু দেবার চেষ্টা করব।’ মঙ্গলবার রাতেই অনেক ফুটবলাররা ক্যাম্পে উঠেছেন। বাকিরা উঠেছেন কাল। কোভিড-১৯ পরীক্ষা শেষে আজ থেকে সাফের অনুশীলন শুরু হবে।

যে ২৩ ফুটবলার নিয়ে কিরগিজস্তান গিয়েছিলেন জেমি ডে, সেই দলের ৩ জন নেই অস্কারের প্রাথমিক তালিকায়। দুই প্রবাসী ফুটবলার কানাডার রাহবার ওয়াহেদ খান ও ফ্রান্সের নায়েব তাহমিদ ইসলাম এবং তরুণ গোলকিপার মিতুল মার্মাকে বিবেচনায় আনেননি অস্কার। এমন কি ইল্যান্ড প্রবাসী জুলকারনাইনকেও প্রাথমিক তালিকায় রাখেননি নতুন কোচ। দলে ৬ জন যোগ হয়েছেন, যারা আগেও জাতীয় দলে খেলেছেন।

 

জাতীয় দলে যারা ডাক পেলেন: গোলকিপার- আশরাফুল ইসলাম রানা, আনিসুর রহমান জিকো ও শহীদুল আলম সোহেল। ডিফেন্ডার- বিশ্বনাথ ঘোষ, তারিক কাজী, তপু বর্মন, রহমত মিয়া, রিয়াদুল হাসান, ইয়াসিন আরাফাত, রেজাউল করিম, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান ও টুটুল হোসেন বাদশা। মিডফিল্ডার - জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা, সাদ উদ্দিন, রাকিব হোসেন, আতিকুর রহমান ফাহাদ ও মানিক মোল্লা। ফরোয়ার্ড - বিপলু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান সুফিল, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুমন রেজা, মতিন মিয়া, জুয়েল রানা ও এলিটা কিংসলে।

Link copied!