টাইগাররা কি পারবে শেষটা রাঙাতে!

ইফতেছামুল ইশাদ

নভেম্বর ৮, ২০২৩, ০৮:৪৩ পিএম

টাইগাররা কি পারবে শেষটা রাঙাতে!

শতরান ছাড়ানো জুটি গড়েন সাকিব-শান্ত। ছবি: ক্রিকইনফো

লঙ্কানদের ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ের ছন্দ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। টানা ৬ ম্যাচ পরাজয়ে যখন দিশেহারা টাইগাররা, তখন এমন একটা জয় যেন স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে সবার মাঝে।

চলমান বিশ্বকাপে টাইগারদের সেমিতে খেলার সমীকরণ চুকে গেছে অনেক আগেই। ভারতে বিশ্বকাপ খেলা বাংলাদেশের দৃষ্টি এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। টাইগারদের সামনে এখনও অভিন্ন সমীকরণ, ২০২৫ সালের আরেকটি আইসিসির আসরে খেলতে হলে থাকতে হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ আটে।

শ্রীলঙ্কাকে গতকাল ৩ উইকেটে হারিয়ে কাজটি অনেকটা এগিয়েও রেখেছে। তবে নিশ্চয়তা পেতে থাকতে হচ্ছে অপেক্ষায়। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয়ে ৪ পয়েন্ট তুলে টেবিলের সাতে ওঠা সাকিবদের সেই আশা বেঁচে থাকছে।

দিল্লিতে খেলতে নামার আগেই দুই দলের সেমির স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। সাকিবদের মতো বাঁচা-মরার সমীকরণে নেমেছিল লঙ্কানরাও। যা ছিল, তার সবটা জুড়ে পয়েন্ট টেবিলের আটের মাঝে থাকার লড়াই। লঙ্কানরা সেখানে পেরে ওঠেনি। সাকিবদের কাছে বিশ্বকাপে প্রথমবার হেরে নেমে গেছে অষ্টম অবস্থানে। দুই ধাপ ওপরে উঠে সাকিবরা এসেছেন সপ্তমে।

১১ নভেম্বর বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিলে প্রয়োজন পড়বে না কোনো সমীকরণের। অজিদের বিপক্ষে সহনীয় পর্যায়ে হারলেও হারাবে না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জায়গা।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে লক্ষ্য পূরণের ম্যাচে নামা সাকিবরা সবদিক থেকেই পিছিয়ে ছিলেন। টাইগাররা বিশ্বকাপের মঞ্চে এর আগে আর কখনও হারাতে পারেনি  লঙ্কানদের। বারবার রঙ বদলানো ম্যাচে উত্তেজনার চরম পারদ তৈরি হয় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের আউট কাণ্ডে।

সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হয়ে ফিরলে ক্রিজে আসতে বিলম্ব করেন ম্যাথিউস। তাতেই ঘটে ক্রিকেটে বিরল ঘটনা। প্রথমবারের মতো টাইমড আউট হন কোনো ব্যাটার।

নির্দিষ্ট সময়েই ম্যাথিউস মাঠে প্রবেশ করলেও বলের মুখোমুখি হতে দেরি হওয়ায় আউট হয়েছেন তিনি। এমসিসির আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যাটার আউটের ৩ মিনিটের মধ্যে পরের বলটা খেলতে হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, ২ মিনিটের মধ্যে খেলতে হবে। ম্যাথিউস ২ মিনিটের মধ্যে উইকেটে এলেও বল খেলতে পারেননি।

এটা বুঝতে পেরে সাকিব আবেদন করেন। পরে আম্পায়ারও আউট দেন। এ ঘটনার পরও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা।

৫ রানে প্রথম উইকেট হারানো দল ১৩৫ রানে হারিয়ে বসে টপ অর্ডারের পাঁচ উইকেট। বাকি সময়ে অনেকটা একাই দলকে টেনে নেন আসালাঙ্কা। ১০৫ বলের ইনিংসে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় খেলেন ১০৮ রানের ইনিংস। তানজিম সাকিব ৩ উইকেট নিলেও ছিলেন বেশ খরুচে। ইনিংসের শেষদিকে ডি সিলভার ৩৪ আর থিকসেনার ২১ রানে ভর করে তিনশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ পায় মেন্ডিসরা।

ব্যাটিংয়ে হাল না ছাড়া লঙ্কানরা বোলিংয়েও আগুন ঝড়ান। বড় লক্ষ্যে নামা টাইগারদের দুই ওপেনারকে ব্যর্থ প্রমাণ করেন আরেকবার। লিটনের ২৩ আর তানজিদ তামিমের ৯ রান। আরেকটি ব্যাটিং বিপর্যয়ের শঙ্কায় পড়েন টাইগার ফ্যানরা। এরপর শতরান ছাড়ানো জুটি গড়েন সাকিব-শান্ত। তাতেই জয়ের ভিত পায় বাংলাদেশ।

দলের রান দুইশ পার করিয়ে সাকিব যখন ফেরেন তখন তার ব্যক্তিগত রান ৮২। অধিনায়কের মতো সহ-অধিনায়কও পুড়েছেন সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপে। ১২ চারে শান্ত ফিরেছেন ৯০ রান করে। বাকি পথ এগিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক ব্যর্থ হলেও শেষটা ১৫ রানে রাঙান তাওহীদ হৃদয়।

শেষদিকে শঙ্কা জাগালেও ২৮২ রানের স্কোর ছুঁয়ে বাংলাদেশ পায় আশা বাঁচানোর জয়। টাইগার ফ্যানদের এখন চোখ থাকবে শনিবার অজিদের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতে বিশ্বকাপের শেষটা রাঙাতে।

Link copied!