মরক্কোর কাছে আবারও হেরে গেল ছন্দ হারা ব্রাজিল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২৬, ২০২৩, ১২:৫৫ পিএম

মরক্কোর কাছে আবারও হেরে গেল ছন্দ হারা ব্রাজিল

ছন্দ হারিয়ে ফেলা ব্রাজিল দল আবারও পথ হারাল। গত কাতার বিশ্বকাপে যে মরক্কোর কাছে তারা কোয়ার্টারে হেরে বসেছিল, সেই আফ্রিকান সিংহের সামনে আবারও তারা মুখ থুবরে পড়ল। বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগালের মতো দলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে নাম লেখায় আফ্রিকার অদম্য মরক্কো। অপরদিকে হেক্সা মিশনে নেমে ব্রাজিল থমকে গিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালেই। রবিবার তারা আবার মুখোমুখি হয়েছিল এক প্রীতি ম্যাচে। কিন্তু বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় দেখাতেও হার মানতে হল সেলেসাওদের। গ্র্যান্ড স্টাডে ডে টেঙ্গার স্টেডিয়ামে স্বাগতিকরা ২-১ গোলে হারিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

তিতেকে ছাঁটাইয়ের পর অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হামোন মেনেসেসের অধীনে বিশ্বকাপ ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে নেমেছিল ব্রাজিল। পাঁচজন তরুণকে দলে ভেড়ানো হয়েছিল ম্যাচটিকে সামনে রেখে। সাথে ছিল ফুটবল কিংবদন্তী পেলের আশির্বাদ। পেলেকে হারানোর পর এই ম্যাচ দিয়েই তারা মাঠে ফিরেছিল।

অন্যদিকে ওয়ালেদ রেগরাগির দলের লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপ ছন্দ ধরে রাখা। উজ্জীবিত ফুটবল খেলে সেই লক্ষ্য দারুণভাবে সফল হলো দলটি। ব্রাজিল হেরে গেল অপ্রত্যাশিভাবেই।

আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে এদিন সমান তালেই লড়েছে দল দুটি। মাঝ মাঠের দখলে অবশ্য কিছুটা এগিয়েছিল ব্রাজিল। ৫৪ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল তাদের। শট নেয় ১৪টি, যার ৪টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১১টি শট নিয়ে ৩টি লক্ষ্যে রাখতে পারে মরক্কো।

তবে ম্যাচের ১৩তম মিনিটেই ব্রাজিলকে এগিয়ে দিতে পারতেন পালমেইরাসের তরুণ রনি। লুকাস পাকেতার থ্রু বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি। দশ মিনিট পর প্রথম সুযোগ পায় মরক্কো। হাকিম জিয়াশের পাস থেকে নুসায়ার মাজরাওয়ির জোরালো শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। এরপর সময় ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়রা খেলেছেন উদাসীন এক খেলা। 

২৪তম মিনিটে তো বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিলেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। ডি-বক্স ছেড়ে এসে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন। তবে তড়িৎ গতি ডি-বক্সে ঢুকে ঠেকান আন্দ্রে সান্তোসের শট। তবে আলগা বলে রনির শট কোনো মতে ধরে ফেলতে সমর্থ হন এ গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর বল জালে পাঠিয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। ২৯তম মিনিটে এগিয়ে যায় মরক্কো। ডি-বক্সের ফাঁকায় নিজে শট নিতে পারলেও শতভাগ নিশ্চিত হতে বুফালকে কাটব্যাক করেন বিলাল এল খানুস। বল ধরে অসাধারণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করতে কোনো ভুল করেননি আল রাইয়ানের এ ফরোয়ার্ড। সাত মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারতো ব্রাজিল। সুবর্ণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন রদ্রিগো। গোলমুখে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। পরের মিনিটে জিয়াশের শট পোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪৮তম মিনিটে রদ্রিগো অসাধারণ ভলি ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বোনো। আট মিনিট পর আজ্জেদিন উনাহির দূরপাল্লার প্রচেষ্টা ঠেকান ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক ওয়েভেরতন।

৬৭ মিনিটে কাসিমিরো সমতা ফিরিয়েছিলেন। এই গোলে কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা ছিল। মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো বলটি ধরলেও তা ফস্কে বেরিয়ে যায়।

এরপর দুই দলই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চালায়। ৭৯ মিনিটে আরেক গোল পেয়ে যায় মরক্কো। সাবিরি দারুণ ফিনিশিংয়ে ২-১ করেন। শেষ পর্যন্ত ওই লিড নিয়েই ম্যাচ শেষ করে স্বাগতিকরা।

তবে খেলা নিয়ে বিশেষ করে রেফারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। রেফারি খেলার গতিপ্রকৃতি মাঝেমধ্যেই থমকে দিয়েছে। মরক্কোর বিপক্ষে কাঙ্ক্ষিত সেই জয় না পাওয়ার দায়ও দিয়েছেন রেফারিও ওপর। যেমন কাসেমিরো খেলা শেষে বলেছেন, ‘সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, যদিও ব্রাজিল কখনো এরকম বিষয়ে কখনো অভিযোগ করে না, এরপরও সবচেয়ে বড় সমস্যার কথা বললে, সেটি ছিল রেফারি।’

কাসেমিরোর কণ্ঠে সুর মিলিয়েছেন রদ্রিগোও, ‘আমি রেফারিকে নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। তবে রেফারিং খুব ঝামেলাপূর্ণ ছিল। রেফারি ম্যাচের গতি নষ্ট করেছে বারবার। আমি কোনো অজুহাত দিচ্ছি না। আমরা নিজেদের দায়ও নিচ্ছি।’

Link copied!