শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১৯, ২০২২, ০৭:২৩ এএম

শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার, তা করতে ভারতকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জেএম সেন হলে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সরকারকে বলেছি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে যদি আমরা শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিই। এমন কোনো কাজ করব না, যাতে স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।’

বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি বলে তাঁর যে বক্তব্য এর আগে গণমাধ্যমে এসেছে, তা ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে টুইস্ট করে’ প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ভারতে তিনি যা কিছু বলেছেন, তা বিবেকের তাড়নায় বলেছেন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে টলানোর জন্য কেউ যদি দেশকে অস্থিতিশীলতার পথে নিয়ে যায়, তাহলে আপনার-আমার প্রত্যেকের জন্য বিপদ। সেই বিপদ যাতে না আসে সে জন্য স্থিতিশীলতা চাই।’

এর আগে কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উদ্‌যাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি চন্দন তালুকদার বক্তব্য দেন। তিনি গত বছর দুর্গাপূজায় চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে হামলার প্রসঙ্গ তুলে দেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া ওই বক্তব্যের সমালোচনা করেন।

নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এক বছর আগে পূজার সময় কুমিল্লায় একটি মন্দিরে দেবতার কাছে কোরআন শরিফ রেখে একটা ছবি তোলা হয়। ওটা ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়ার পর কিছু মোল্লা গোষ্ঠী ওখানে আক্রমণ করে। আক্রমণ থামাতে গিয়ে পুলিশ গুলি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে তখনো আমরা কিন্তু কুড়িগ্রামের কাহিনি জানতাম না। তখন আমাদের মন্ত্রণালয় যেসব কথা বলেছে, সত্যি কথা বলেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শিক্ষক লোক। সত্য কথা বলি। শ্রীকৃষ্ণ সত্য কথাই বলতেন। আমরা বলেছি, তখন পর্যন্ত মোট ছয়জন লোক মারা যায়। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, চারজন মুসলমান, দুজন হিন্দু। তবে আমরা একজন লোকও মারা যাক চাইনি।’

কুমিল্লার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘১৭-১৮টা বাড়ি ভেঙে ফেলেছিল। সরকার সবগুলো বাড়ি মেরামত করে দিয়েছে, তাদের আর্থিক সহায়তাও দিয়েছে। আমরা এমন কাজ করব না, ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে এমন উসকানি দেব না যাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়।’

পাঁচ দিনব্যাপী ওই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী।

Link copied!