মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা,নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধের সাথে মিয়ানমার সেনাবিাহিনী জড়িত।জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি "অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ" নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাতারভিত্তিক আলজাজিরা এবং ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’র খবরে বলা হয়, প্রতিবেদনে বলা হয়- মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত, এর মধ্যে অনেকগুলো যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
গত বছর মিয়ানমারে সেনা অভুত্থান হওয়ার পর এই প্রথম একটি বিস্তারিত মানবাধিকার প্রতিবেদন গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলে বলেছেন, মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনী মানুষের জীবনের প্রতি নিদারুণ অবহেলা দেখিয়েছে, জনবহুল এলাকায় বিমান হামলা এবং ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
তিনি বলেন, “মিয়ানমার সেনাবাহিনী ঘটনার শিকার অনেককেই মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে, পুড়িয়ে মেরেছে ও , নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেছে।”
মিয়ানমারের সামরিক মুখপাত্র জাতিসংঘের এমন প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। নৃশংসতার ঘটনা অস্বীকার এবং অশান্তি সৃষ্টির জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে তিনি।
তবে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনের ব্যাপারে মিয়ানমার এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।তবে সামরিক বাহিনী বলেছে, দেশেরশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব। তারা নৃশংসতার ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করার পাশপাশি ‘অশান্তি’ সৃষ্টির জন্য "সন্ত্রাসীদের" দায়ী করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ছাদ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা, মাদকের ইনজেকশন দেওয়া, এছাড়া অনেকেই ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতারও শিকার হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচি’কে সরিয়ে শাসন ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে সাধারণ জনগণ অভুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলে অত্যাচার ও নির্যাতন চালায় সেনাবাহিনী। শুরু হয় দেশ জুড়ে আন্দোলন, সহিংসতা। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ায় দেশটির অন্তত ১১ হাজার ৭৮৭ জনকে আটক করা হয়। তাদের নির্যাতনে মারা গেছেন কয়েক শ’ মানুষ।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা, সিএনএন