বিএসএফকে ‘ধর্ষক-খুনি’ বলায় অপর্ণা সেনের বিরুদ্ধে মামলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১৮, ২০২১, ০৯:৩০ পিএম

বিএসএফকে ‘ধর্ষক-খুনি’ বলায় অপর্ণা সেনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিবেশী দেশ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে ভারতের বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং পরিচালক অপর্না সেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ধর্ষক’, ‘খুনী’ শব্দ প্রয়োগ করায় অপর্ণা সেনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী পৃথ্বীশ দাস।

পৃথ্বীশ দাসের দাবি, অপর্ণা সেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনীকে অসম্মান করেছেন। ৭ দিনের মধ্যে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।

সম্প্রতি, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে ভারত সরকার। এর প্রতিবাদ করে অপর্ণা সেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশে সেনা শাসন তৈরীর চেষ্টা করছে। সেনাকে যতটা ক্ষমতা দেওয়ার কথা, তা থেকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। 

বিএসএফের এখতিয়ার বৃদ্ধি পেলে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, জঙ্গি কার্যকলাপ বন্ধের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে অপর্ণা সেন বলেছেন, ‘চোরাচালনের কথা বলা হলে, বর্ডার পিলার থেকে যদি কাঁটাতার এতটা দূরে থাকে তাহলে তো চোরাচালান চলবে। বিএসফের উচিত আইবিপি-র কাছাকাছি থাকা । তারা যদি ৫০ কিমি ভেতরে চলে আসে তাহলে ওদিকে কী হচ্ছে, তা কী করে আটকানো যাবে। মাথায় ঢুকছে না’।

অপর্ণা সেন বলেছেন, ‘সবচেয়ে আগে বলা দরকার, ১৯৪৫ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার পিলার (আইবিপি) থেকে দেড়শো গজ দূরে থাকবে কাঁটাতারের বেড়া বা দেওয়াল। কিন্তু সেগুলো বাড়তে বাড়তে অনেক জায়গায় ইতিমধ্যেই ৬ কিলোমিটার, অনেক জায়গায় ১২ কিলোমিটার হয়ে গেছে’।

বিএসএফের ক্ষমতার পরিসর বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে ২২১৬ কিমি জুড়ে। এরমধ্যে প্রায় ১৬৩৮ কিমি ফেন্সিং দেওয়া হয়েছে। ৬০০ কিমির মতো এলাকায় ফেন্সিং নেই। ফলে অনুপ্রবেশের বিপদ বেশি। বিএসএফের ক্ষমতার পরিসর এক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হবে। এই যুক্তি প্রসঙ্গে অপর্ণা সেন বলেছেন, ‘এটা বিশ্বাস করা কঠিন, প্রতি বছর দেড়শো জন বিএসএফের গুলিতে মারা যাচ্ছে। বিচার হচ্ছে না। বলা হচ্ছে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয়। এমনটা হলে তাহলে দুই পক্ষের হতাহতের আশঙ্কা থাকে। মৃতদের অনেকেরই পিঠে গুলি লেগেছে’।

তিনি বলেন, ‘বছর দু-তিন আগে ছিটমহলে মানুষের দুর্দশা দেখে এসেছি। সবচেয়ে আগে, সেখানকার মানুষের প্রয়োজনীয়তার দিকে  নজর দেওয়া দরকার। প্রান্তিক মানুষদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাতের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধির বিরোধিতায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। রাজ্য সরকারের অবস্থানে সমর্থন জানিয়ে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে ভারতের বিশিষ্টজনদের একাংশ।

Link copied!