বাতিল করা হয়েছে গত শনিবার (০৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ৫ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তোলা হয়েছিল ৫ ব্যাংকের এই সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করলো।
এর আগে, গত শনিবার (০৬ নভেম্বর) ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়। গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রশ্নফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্যকে প্রথমে গ্রেপ্তার করেন। পরে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে ডিবি বলছে, ব্যাংকের ছাড়াও আরো চারটি নিয়োগ পরীক্ষাতেও প্রশ্নফাঁস করেছে চক্রটি।
ডিবির প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, জড়িত সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনলোজির আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৬০ কোটি টাকা। বুধবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁসের মূলহোতা আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যায়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল (৩৪), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও পরীক্ষার্থী স্বপন। পরে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় নতুন করে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, খোকন, সোহেল, জাহিদ।
খোকন জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, সোহেল ইতোমধ্যে জনতা ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত। জাহিদ পরীক্ষার্থী সংগ্রহে এজেন্টের কাজ করতো। এদের সবাইকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত পাঁচটি ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি অফিসার (ক্যাশ) শূন্যপদের নিয়োগ পরীক্ষা গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ১৮৩টি, জনতা ব্যাংকে ৫১৬টি, অগ্রণী ব্যাংকে ৫০০টি, রূপালী ব্যাংকে ৫টি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ৭টি পদ রয়েছে। বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পুরো পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহসানউল্লাহ ইউনির্ভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনলোজি।