দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে হাজী সেলিম ওই জামিন আবেদন করেন।
হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ হাজি সেলিমের পক্ষে তিনটি আবেদন দাখিল করেন। এগুলো হলো-আপিলের শর্তে জামিন আবেদন, কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা এবং কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্ববধানে উন্নতমানের হাসপাতালে বেটার ট্রিটমেন্ট।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ৯ মার্চ হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ আদালত ওই রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। দুই বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ৬৮ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালে হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুটি ধারায় মোট ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত।
২০০৯ সালে হাজী সেলিম বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালে ওই সাজা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে দুদক আবেদন করলে তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় শুনানি করতে নির্দেশ দেন। আপিল বিভাগের ওই নির্দেশ অনুযায়ী ২০২০ সালের মামলাটি শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় দুদক।
পরে গত বছরের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে আংশিক আপিল মঞ্জুর করে ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন আদালত। আর ৩ বছরের দণ্ড থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।