চট্টগ্রাম আদালত থেকে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আদালত প্রাঙ্গণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় একজন আইনজীবী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রথম আলো অনলাইনে এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর বিকেলের দিকে এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। সোয়া ১২টার দিকে চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে পুলিশ-বিজিবি-এপিবিএন সদস্যদের পাহারায় আদালত ভবন থেকে নামিয়ে নিচে রাখা প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়। তারা এ সময় বিক্ষোভ শুরু করে।
আরও পড়ুন: চিন্ময় ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার নিয়ে যে বার্তা দিলো ভারত সরকার
আরও পড়ুন: চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চেয়ে ফরহাদ মজহারের কড়া স্ট্যাটাস
এসময় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী চেষ্টা করেও প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে কারাগারে নিতে পারেনি। পরে পৌনে বেলা তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, ক্যাঁদানে গ্যাসের (টিয়ার) শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এর পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।
পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় আটজন চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা হলেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক। গুরুতর আহত হওয়া আরেকজনের নাম এখনো জানা যায়নি। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর রাত থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: জামিন হয়নি, কারাগারে চিন্ময় দাস
আদালত এলাকায় সন্ধ্যা ৬টায় আইনজীবীরা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিলেন। আগামীকাল বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ঢাকায় চার ও চট্টগ্রামে ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম।