আগস্ট ৯, ২০২৪, ১০:৩১ এএম
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে থাকা দীর্ঘায়িত করা ঠিক হবে না বলে উল্লেখ করেছেন নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল বুধবার (৯ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন তিনি।
চলতি বছর জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। ধীরে ধীরে কোটা বৈষম্যের এই প্রতিবাদ শেখ হাসিনার পদ ত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট বঙ্গভবনে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করেন শেখ হাসিনা। সেদিনই তাদের বহনকারী বিমান দিল্লির উপকণ্ঠে হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমানে ‘সেফ হাউসে’ অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে ফেরার আগে ড. ইউনূস এনডিটিভিকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, সেই প্রতিবেদনের ভেতরেই উঠে আসে, শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য যাওয়া ও আশ্রয় নেওয়ার পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং ভারতের থাকার সময় বর্ধিত করা হতে পারে। অন্য একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাজ্য কার্যকরভাবে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ফিনল্যান্ডসহ অন্যান্য বিকল্পগুলো তিনি বিবেচনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে হাসিনা-পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, তার মায়ের (শেখ হাসিনা) ভারত ছাড়ার তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নেই। জয় জানান, শেখ হাসিনা অন্য কোনও দেশে যাবেন কিনা সেটা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ৮৪ বছর বয়সের ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে মোট ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বঙ্গভবনে শপথ নিয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাই প্রধান উপদেষ্টা করতে সুপারিশ করেন।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে তার প্রয়োজনের সময় সমর্থন দিতে ভারত আগ্রহী থাকলেও তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য আশ্রয় দেওয়া নয়াদিল্লিকে একটি শক্ত অবস্থানে ফেলতে পারে। কারণ দেশটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে স্বার্থ সুরক্ষার দিকেই দৃষ্টি দেবে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার পর এখন পরবর্তী ধাপ হবে বাংলাদেশে নির্বাচনের আয়োজন করা। সেদিক থেকে ভারতের উদ্বেগ হলো, ঢাকায় শেখ হাসিনার বিরোধীরা ভারতে তার এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।