আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৩৩ জন কর্মকর্তাকে তিন স্তরে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯ জন চতুর্থ গ্রেডে, ১১ জন পঞ্চম গ্রেডে ও ১৩ জন ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পেয়েছেন। তবে গ্রেডেশন তালিকায় থাকার পরও তিন পদে সাতজন পদোন্নতি পাননি।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) পদোন্নতি সংক্রান্ত জারি করা পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এবিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে বলেন, যেসব পদ শূন্য ছিল সেসব পদের বিপরীতে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। গ্রেডেশন তালিকায় থাকার পরও যারা পদোন্নতি পাননি, তাদের প্রত্যেকের কিছু না কিছু যৌক্তিক কারণ ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “যে সাতজন কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি তাদের কারো বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা, এসিআর খারাপ হওয়া ও বিভিন্ন সময়ে অপরাধে যুক্তের প্রমাণ রয়েছে। ওইসব বিবেচনায় তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।”
ইসি সূত্র জানায়, চতুর্থ গ্রেডে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার ১০টি পদের মধ্যে ফাঁকা থাকা ৯টিতে মঙ্গলবার পদোন্নতিপ্রাপ্তরা হলেন- নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. মইন উদ্দীন খান, মো. আব্দুল হালিম, রাশেদুল ইসলাম এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম ও মো. ইউনুচ আলী।
এ ছাড়া চলতি দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, ময়মনসিংহের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী এবং বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন একইপদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
ইসি সূত্র আর জানায়, পঞ্চম গ্রেডের পদভুক্ত উপসচিব, উপ-পরিচালক ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পদে ১১ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন-কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুঞ্জুরুল আলম, খুলনার অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রুকুনুজ্জামান, চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজশাহীর অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহম্মেদ, বরিশালের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান মুন্সী, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. রুহুল আমিন মল্লিক ও মো. শাহ আলম, ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান, রংপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ-আল-মোতাহসিম এবং রাজশাহীর অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান। তবে গ্রেডেশন তালিকায় থাকার পরও পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, মো. হেলাল উদ্দিন খান ও মো. সোহেল সামাদ।
অন্যদিকে, ৬ষ্ঠ গ্রেডে ইসির পদগুলো হচ্ছে সিনিয়র সহকারী সচিব, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এ পদে পদোন্নতি পাওয়া ১৩ কর্মকর্তা হলেন- যশোরের মনিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রমানিক, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, বাগেরহাটের ফকিরহান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এটিএম শামীম মাহমুদ, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আ. আজিজ, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আবু ছাইদ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপ-পরিচালক মো. তকদির আহমেদ, পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান খান, কুড়িগ্রামের সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আফতাব উজ্জামান, চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন মো. জিয়াউল হক খান, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এমএজি মোস্তফা ফেরদৌস এবং জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল আলম।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে যোগদানের পর চাকরি জীবনে এই প্রথম তারা কোনো পদোন্নতি পেলেন।