১৫ আগস্টের পর মুক্তিযোদ্ধারা পরিচয় দিতে ভয় পেতেন: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২১, ২০২১, ০৩:১৫ পিএম

১৫ আগস্টের পর মুক্তিযোদ্ধারা পরিচয় দিতে ভয় পেতেন: প্রধানমন্ত্রী

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর সে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল বলেও তিনি জা্নান। খবর বাসস’র।

রবিবার(২১ নভেম্বর) সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সম্মান জানাতে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেল আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ওই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা যাতে  কোনভাবে ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাসহ আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সশস্ত্রবাহিনী দিবসে আমি এ’টুকুই চাই, প্রতিটি বাঙালি পৃথিবীর যেখানেই যাক না কেন যেন মাথা উঁচু করে বলতে পারে আমরা বিজয়ী জাতি, উন্নত জাতি। আমরা নিজেদের দেশকে গড়ে তুলেছি একটা সম্মানজনক অবস্থানে।”

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর সে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “শুধু তাই নয়, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো—মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের মানুষ যে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যে অবদান রেখেছিল, ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে এমন একটা সময় এসেছিল যে, যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা, তাঁরা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতেই ভয় পেতেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “তাঁরা (বীর মুক্তিযোদ্ধারা) নিজেদের পরিচয় দিতে পারতেন না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। একটা মনগড়া ইতিহাস চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের নিজেদের বিজয়গাঁথা কখনও বিকৃত করা হয় না। কিন্তু সে ধরনের একটা জঘন্য কাজ আমাদের দেশে করা হয়েছিল।”

লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের অর্জন ধরে রেখেই এগিয়ে যেতে হবে, এমন অভিমত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের দিনে আমাদের মনে রাখতে হবে এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি  লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আমাদের স্বাধীনতা, কাজেই যা কখনো ব্যর্থ হতে পারেনা।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে, বাংলাদেশকে বিশ্ব মর্যাদায় আমরা আজকে নিয়ে এসেছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো। এই লক্ষ নিয়েই আমরা কাজ করছি। “

এর আগে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।রবিবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে তারা পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সামরিক কায়দায় অভিবাদন জানায়। পরে সেখানে পরিদর্শক বইয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছানোর পর সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনীপ্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমানবাহিনীপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁকে স্বাগত জানান।

Link copied!