ছবি: সংগৃহীত
চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫৬ শতাংশের বেশি সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং বেড়েছে বলে জানিয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
মঙ্গলবার, ২৭ মে বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি জানায়, মূলত জুলাই বিপ্লবের পর এ ধরনের রিপোর্টিং ব্যাপক বেড়েছে।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের আগে সরকার নিয়ন্ত্রণ নেবে, আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।
দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে প্রতি বছর কয়েক লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। এ অর্থের বড় একটি অংশ পাচার হলেও অনেকেই থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিএফআইইউর তথ্য বলছে, গত অর্থবছর সন্দেহজনক লেনদেন তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি ছিল।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ হাজার ১০৬টি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৩৪৫ টিতে। এছাড়া, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারি সংস্থার সাথে ১ হাজার ১২০টি তথ্য বিনিময় করেছে বিএফআইইউ, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।
সংস্থাটির প্রধান শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়নের গতিরোধ করে একটি স্থিতিশীল ও আর্থিক ব্যবস্থা এবং এটা প্রতিষ্ঠা করতে বিএফআইইউর আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘লক্ষ্য কি টাকা উদ্ধার নাকি তাদের শুধু হয়রানি করা? জেলে পোড়া তো খুবই কঠিন ব্যাপার। আমার কাছে প্রধান হচ্ছে, ব্যাংক থেকে টাকা গেছে, আমাকে এটা উদ্ধার করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কোনো ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে না। তবে প্রাথমিকভাবে ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হবে। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান গভর্নর।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা একবারে তো সবগুলো করতে পারব না। আমাদের ক্যাপাসিটিও তো সীমিত। সেজন্য সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটা এখনও বলাটা মুশকিল। তবে ইসলামি ব্যাংকগুলোকে নিয়ে একটা করার কথা আমরা চিন্তা করছি। সেটা হবে। কারও চিন্তার কোনো কারণ নাই কারণ প্রথম পর্যায়ে যেটা আইনেই বলা আছে সরকারীকরণ করা হবে।’
এসময় বিএফআইইউ জানায়, শুধু নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যাংকের হিসাব জব্দ করা হয় না, বিভিন্ন সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতেও জব্দ করা হয়।