রোমানিয়া ছেড়ে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার সময় সীমান্তে কমপক্ষে ২৩ বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীকে আটক করেছে রোমানিয়া সীমান্ত পুলিশ। এরা সবাই বৈধ ভিসায় রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রোমানিয়ার নাদলাক ক্রসিংয়ে সীমান্তরক্ষীরা মিনারেল ওয়াটারের বোতল পরিবহনে ব্যবহৃত একটি গাড়ি তল্লাশির সময় এদের দেখতে পায় বলে ইনফোমাইগ্রেন্টস জানায়।
সীমান্ত পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। ২০ থেকে ৪৬ বছর বয়সের এসব ব্যক্তির সবাই কর্মী হিসেবে ভিসা নিয়ে রোমানিয়াতে গিয়েছিলেন।
অন্য একটি গাড়ি তুরস্ক-পোল্যান্ড রুটে প্লাস্টিকের দানা বহন করছিল। টহল দল তল্লাশির সময় গাড়িটিতে ২৪ জন বিদেশি নাগরিককে খুঁজে পায়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাঁরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নাগরিক, যাঁদের বয়স ২০ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে। তাঁরাও কর্মী হিসেবে ভিসা নিয়ে বৈধভাবে রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন। এই ২৪ জনের মধ্যে কতজন বাংলাদেশের নাগরিক, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সীমান্তরক্ষীরা এখন ওই দুই চালকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অপরাধ এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বেআইনি উপায়ে রাষ্ট্রীয় সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধ তদন্ত করছে। আইন অনুযায়ী অভিবাসীদের সবাইকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবে রোমানিয়া ও শেঙেন জোনে ওই অভিবাসী দুই দলকে আবার পূণপ্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ।
একই ধরনের অপর একটি ঘটনায় এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ফরাসি পুলিশ ইতালির তুরিন শহর থেকে আসা ৩২ আফগান, পাকিস্তানি, বাংলাদেশি ও ভারতীয়কে আটক করে। পরবর্তী সময়ে তাঁদের ইতালি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী গতকাল শুক্রবার ঢাকার গণমাধ্যমকে বলেন, কর্মী ভিসা নিয়ে বৈধভাবে এসেও রোমানিয়া থেকে চলে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেও চলে যাওয়া ব্যক্তিরা ধরা পড়েন না। ধরা পড়ার পর রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ যদি দূতাবাসে যোগাযোগ করে, তখন আটককৃত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর জন্য ট্রাভেল পারমিট (টিপি) ইস্যু করা হয় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত ৮৭ জনকে টিপি দেওয়া হয়েছে।
বৈধ ভিসা নিয়ে এসে অভিবাসী কর্মীরা চলে যেতে থাকায় রোমানিয়া বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। একই কারণে দেশটি ঢাকায় কনস্যুলার অফিস গুটিয়ে নিয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।