অতিভারী বৃষ্টিপাতে ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ড্যাম (বাঁধ) ভেঙে গিয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়িতে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। পানি বাড়তে থাকায় গজলডোবা পয়েন্টে বাংলাদেশে পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তা বিজড়িত এলাকাগুলোয় প্রবল বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তা নদীর উপকূলবর্তী নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ব্যাপক এলাকার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে তিস্তার পানি দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকায় রংপুরের পাঁচ জেলায় ভয়াবহ বন্যার সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে চলে গিয়েছে।
অসময়ে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় নদীপাড়ের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছে। তিস্তা-তীরবর্তী এলাকায় বন্যা সতর্কীকরণের আভাস দিয়ে মাইকিং করছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন। নদী পাড়ের মানুষকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র বা নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় তিস্তা নদীতে বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাংয়ের ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে নদীর পানির সমতল দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আগামী শনিবার নাগাদ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, পুনর্ভবা, কুলিক, টাঙ্গন, ইছামতী, যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদীর পানির সমতল কখনও কখনও দ্রুত বাড়তে পারে।
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মহানন্দা, ছোট যমুনা, করতোয়া, আত্রাই ও গুড় নদীর পানির সমতল কখনও কখনও দ্রুত বাড়তে পারে।
এদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের আট বিভাগে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।