অক্টোবর ১৪, ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম
বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেসব শিশু ভর্তি আছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮৭ শতাংশ শিশু ডেন-২ দ্বারা আক্রান্ত। আর ১৩ শতাংশ শিশুর আক্রান্তের কারণ ডেঙ্গু ভাইরাসের ডেন-৩ ধরন। সাধারণত দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্তদের শরীরে ডেঙ্গুর এই দুই সেরোটাইপ পাওয়া যায়।
শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতাল মিলনায়তনে ডেঙ্গু নিয়ে একটি গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় উঠে এসেছে, ৭১ শতাংশ রোগীই বিপজ্জনক পর্যায়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ডেঙ্গুতে এবার বেশি মৃত্যুর এটিও একটি কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘ডেঙ্গু ভাইরাল ইনফেকশন ইন চিলড্রেন অব এ টারশিয়ারি কেয়ার পেডিয়াট্রিক হসপিটাল ইন বাংলাদেশ: এপিডেমিওলজি অ্যান্ড জিনোমিক অ্যানালাইসিস’ শীর্ষক এ গবেষণার প্রধান গবেষক হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
গবেষণাধীন নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে দেখা গেছে, ১১৩টি ডেঙ্গু পজিটিভ নমুনায় ৮৭ শতাংশ ডেন-২ এবং ১৩ শতাংশের ডেন-৩ ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যে শিশুদের ভেতর ৮৭ শতাংশ ডেন-২ ধরনের উপস্থিতি দেখা গেছে, তার জিনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৮ সালের ডেন-২-এর জিনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি। যে ১৩ শতাংশের ডেন-৩ ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, তার জিনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৭ সালের ডেন-৩-এর জিনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি।
শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রথমবার যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়, তাদের খুব বেশি উপসর্গ থাকে না। প্রথমবার সাধারণত ডেন-১ সেরোটাইপে আক্রান্ত হয়। দ্বিতীয়বার যারা আক্রান্ত হয়, তারা অন্য সেরোটাইপে। এ বছর ডেন-২ এবং ডেন-৩ সংক্রমণ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবছরই ডেঙ্গুর নতুন সেরোটাইপ আসছে। শিশুদের মধ্যে যাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে, তারাও দ্বিতীয় দফায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। তাই শিশুদের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে।’
ডাক্তার জাহাঙ্গীর বলেন, এ বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১ হাজার ৩৯ জন ভর্তি রোগীর মধ্য থেকে ৭২২টি শিশুকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের সেরোটাইপ নির্ধারণে ও অন্যান্য ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তকরণে ওই ৭২২টি শিশু রোগী থেকে ১০৪টির রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলো আইসিডিডিআরবির ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।
শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে জানুয়ারি থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ৫ থেকে ১০ বছরের শিশু ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে ১ থেকে ৫ বছরের শিশু রয়েছে ৩৮ শতাংশ, ৫ থেকে ১০ বছর শিশু ৩২ শতাংশ। ১০ বছরের বেশি বয়সী শিশুর সংখ্যা ১৬ শতাংশ। এক বছরের নিচে রয়েছে ১৪ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয় আগস্টে। রোগীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ছেলে ও ৪০ শতাংশ মেয়েশিশু।