রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ১৭তম আন্তর্জাতিক সার্জিক্যাল কংগ্রেস উপলক্ষে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বছরে এই সংখ্যা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কোটি। এরপরও অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যান। জটিল রোগের ক্ষেত্রে আস্থার সংকটের কারণে এসব রোগী বিদেশমুখী হন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাকালে সব মানুষ দেশেই চিকিৎসা নিয়েছে। তবু ঘুরেফিরে রোগীদের বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গ সামনে আসে। দেশে ক্যানসার, কিডনি, হার্টের মতো জটিল রোগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
আমাদের স্বীকার করতে হবে, এ রোগগুলো চিকিৎসায় এখনো পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে তৈরি হয়নি। এসব রোগ চিকিৎসার আধুনিক সুযোগ তৈরি না করলে রোগীদের বিদেশ যাত্রা থামানো যাবে না।
আস্থার সংকট রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীদের আস্থার সংকট রয়েছে। আস্থার পরিবেশটি তৈরি করতে হবে। এটি তৈরি করতে পারলে রোগীরা আমাদের কাছে আসবে।
তিনি বলেন, তারা যদি ভয় পায়, তাহলে দেশে চিকিৎসা করবে না। মানুষ চিকিৎসার জন্য সবকিছু করতে রাজি থাকে। আস্থার পরিবশে তৈরিতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে খুবই অল্পসংখ্যক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছিল। বর্তমানে দেশে প্রায় এক লাখ ২০ হাজারের মতো চিকিৎসক রয়েছে। নার্সের সংখ্যাও বেড়ে প্রায় ২০ গুণ। এক সময় কোনো ওষুধ দেশে উৎপাদন হতো না। এখন শতকরা ৯৯ শতাংশ নিজেরাই জোগান দিচ্ছি। বাইরে রপ্তানি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইনের প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্য বিষয়ক ২০টি আইন করেছি। আইন পাশ করা একটি কঠিন কাজ। স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন শতকরা ৯৫-৯৯ শতাংশ প্রস্তুত। আইনটি পাশ করা নিয়ে আশাবাদী।
এখন এটি সংসদে যাবে, সংসদে যাওয়ার আগে মন্ত্রী পরিষদে যাবে কিন্তু নানা বাধার কারণে সেই পর্যন্ত যেতেই পারিনি। যতই এগিয়ে নিয়ে যাই, এটাকে টেনে রাখা হয়। আশা করি, আগামীতে এ সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চিকিৎসক নিরাপত্তা আইন পাশ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা পাশ করার তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মুহাম্মদ খুরশীদ আলম।