যেসব লক্ষণে বুঝবেন আপনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত

তিথি চক্রবর্তী

অক্টোবর ২, ২০২৩, ১২:৫৩ পিএম

যেসব লক্ষণে বুঝবেন আপনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত

সংগৃহীত ছবি

লিভার সিরোসিস একটি মারাত্মক ও অনিরাময়যোগ্য রোগ। লিভারের নানারকম রোগের মধ্যে এটিকে চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি রোগ বলে গণ্য করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে যকৃতের ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপন ছাড়া পুরোপুরি আরোগ্য হয় না। এই কারণে রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

লিভার সিরোসিসের কারণ

বিভিন্ন কারণে লিভার সিরোসিস হতে পারে। যেমন-

•        হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস
•        অ্যালকোহল
•        কিছু ওষুধ
•        ফ্যাটি লিভার ডিজিজ ইত্যাদি

আমাদের দেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস লিভার সিরোসিসের প্রধান কারণ। অন্যদিকে, পশ্চিমা বিশ্বে লিভার সিরোসিসের অন্যতম কারণ হলো অ্যালকোহল।

লক্ষণ

লিভার সিরোসিস দুই ধরনের—১. কমপেনসেটেড ও ২. ডিকমপেনসেটেড। কমপেনসেটেড সিরোসিসে লিভারের মধ্যে কিছু কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং অল্প মাত্রায় ফাইব্রোসিস হয়। এ ক্ষেত্রে লিভারের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে এবং রোগীর দেহে সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না।

ডিকমপেনসেটেড সিরোসিসে রোগীর শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। রোগীর চোখ হলুদ হয়ে যায় অর্থাৎ জন্ডিস হয়। পায়ে ও পেটে পানি আসে, ক্ষুধামান্দ্য, শরীর ক্ষীণ হয়ে যায়, গায়ে অল্প অল্প জ্বর থাকে এবং প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। এমনকি রক্তবমি ও কালো পায়খানাও হতে পারে।

লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা

কমপেনসেটেড সিরোসিস হলে চিকিৎসা করে কোনো রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে সিরোসিস হয়, তবে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু ডিকমপেনসেটেড সিরোসিসের কোনো সুচিকিৎসা নেই। এ ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন করা।

চিকিৎসকরা যকৃতের রোগে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিকারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেন।

বর্তমানে বিশ্বে লিভার সিরোসিসের অনেক আধুনিক চিকিৎসা উদ্ভাবিত হয়েছে। বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি-র ক্ষেত্রে শিশুদের জন্মের পরপরই টিকা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্করাও এই টিকা নিতে পারেন।

হেপাটাইটিস সি- থেকে বাঁচতে এক রেজরে একাধিক ব্যক্তির শেভ না করা, রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যবস্থা পরীক্ষা করে নেয়া, অরক্ষিত যৌন সম্পর্ক পরিহার - ইত্যাদির মাধ্যমে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

দুষিত পানি, অতিরিক্ত মদ্যপান, খোলা ফলমূল খাওয়ার মতো যেসব কারণে যকৃতের রোগ হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

Link copied!