করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা মৃত্যুর হার কমালেও সংক্রমণ কমায় না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকার অভাব না থাকলেও টিকা নেওয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে বলেও তিনি জানান।
রবিবার (৯ জানুয়ারি)সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের বিভাগীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ওই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। টিকা সংক্রমণ কমায় না, মৃত্যুর হার কমায়। টিকার অভাব হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে।”
মানুষের টিকা নেওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, “ সে কারণে আমার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করছি। টিকা দেওয়ার জন্য আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া হতো, এখন সেটাকে ৯টি ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছি; যাতে বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসে। আজ মৃত্যুর হার এত কম কেন? কারণ এ পর্যন্ত পৌনে ৮ কোটি মানুষ টিকা নিয়েছে। তাই মৃত্যুর হার এত কম।”
সংক্রমণের হার বাড়ার কারণ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ আমি আগেই বলেছিলাম গণজমায়েত কমাতে হবে, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, কোন একটা লোকও এসব বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। যার ফলে দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। একইসঙ্গে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।”
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরকারিভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আজ অথবা কালের মধ্যেই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর মাধ্যমে পূর্বে যেসব নির্দেশনাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সারাদেশে বার্তা চলে যাবে।” কেবিনেট থেকে জানতে পেরেছি এর কার্যকারিতাও খুব শিগগিরই শুরু হয়ে যাবে বলেও তিনি জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সংক্রমণ যদি বাড়তেই থাকে তাহলে সরকারকেই কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। আর এই মুহূর্তে সংক্রমণের লক্ষণ আমরা দেখছি, সংক্রমণ অতিমাত্রায় অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগেই আমাদের দেশে সংক্রমণ নিচে ছিল। দৈনিক দুই থেকে আড়াইশ মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে, এখন সংক্রমণ প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি। এটা আমাদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক। আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে।”
দেশে আশঙ্কাজনকভাবে ক্যানসার বাড়ছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, “ ক্যানসারে প্রতি বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়। আক্রান্ত হয় দেড় লাখ, এখন চিকিৎসাধীন আছে, ২০ লাখ। ভেজাল খাদ্য, মাদক, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ বেশ কিছু কারণে এসব মৃত্যু হয়ে থাকে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক মো. ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।