লাশ সংরক্ষন করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোন ফ্রিজই কাজ করছে না। পাঁচটা ফ্রিজের মধ্যে চারটি ছয়মাস ধরে অকেজো আর একটি ২০ দিন ধরে অকেজো ছিল। গত রবিবার সাড়ে তিনটার দিকে দ্রুত ঠিক করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মরদেহ পচে যাওয়ার কারণও এই নষ্ট ফ্রিজ।
নষ্ট পাঁচটা ফ্রিজে পচছে লাশ
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে মরদেহ রাখার পাঁচটা ফ্রিজ রয়েছে। একটা ফ্রিজে চারটা করে চেম্বার। পাঁচটা ফ্রিজে মোট ২০টা চেম্বার। মর্গের ডোম ইব্রাহীম আলী বাবুল বলেন, ‘পাঁচটা ফ্রিজই নষ্ট ছিল। গত রবিবার সাড়ে ৩টার দিকে দুইটা ঠিক করা হয়েছে।’
‘পাঁচটা ফ্রিজের তিনটা গত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে নষ্ট। বাকি দুইটা নষ্ট ছিল গত দেড় থেকে দুই মাস ধরে। ছয়-সাত মাস আগে সোহেল স্যার ফরেনসিকের প্রধান থাকা অবস্থায় চিঠি দিছিলাম, কিন্তু ঠিক করেন নাই। বর্তমানে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মাকসুদ স্যারকে জানানোর পরে ফ্রিজ ঠিক করার কাজ শুরু হইছে।’
হাফিজুরের লাশে ছিল পোকা
নয়দিন নিখোঁজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের লাশ পায় তার স্বজন। এসময় তার লাশে পোকা পাওয়ার অভিযোগ করে। ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হাফিজুরের মরদেহ পচে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মর্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডোমরা বলেন, ফ্রিজ নষ্ট থাকলে মরদেহ তো পচবেই। আমারা ভালো রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু ফ্রিজ ছাড়া তো ভালো থাকে না।
আইনী জটিলতায় বছর ধরে পচে লাশ
দক্ষিণখানের ব্রিটিশ নাগরিক, কুমিল্লার থেকে আনা নাইজেরিয়ান নাগরিকের ও বারডেম থেকে আনা খোকন নন্দির মরদেহ কয়েক বছর ধরে ফ্রিজে আছে। ফ্রিজ নষ্ট হওয়ার কারণে এই মরদেহ পচে-গলে নষ্ট হয়ে গেছে। এই মরদেহের আইনি রফাদফা না হওয়ার কারণে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে মর্গের ফ্রিজে।
কুমিল্লার থেকে আনা নাইজেরিয়ান নাগরিকের ও বারডেম থেকে আনা খোকন নন্দির মরদেহ কয়েক বছর ধরে ফ্রিজে আছে। ফ্রিজ নষ্ট হওয়ার কারণে এই মরদেহ পচে-গলে নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া অজ্ঞাত মরদেহ তো আসে নিয়মিত। এই অজ্ঞাত মরদেহ কিছুদিন রাখা হয় ফ্রিজে। তার পরিবার খোঁজ পাওয়া যায় কি না দেখার জন্য। পরে পরিবারের খোঁজ না পেলে আঞ্জুমানের মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
ফ্রিজ মেরামতে উদাসীন কর্তৃপক্ষ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেকান্দর আলী দ্য রিপোর্টকে জানান, মর্গের ফ্রিজারগুলো বেশ কিছুদিন ধরে নষ্ট ছিলো। তবে সম্প্রতি এগুলো সব ঠিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নষ্ট ফ্রিজারগুলোর ব্যাপারে তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাকসুদ রহমানকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তার পক্ষ থেকে কোনরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি।