লিবারেল পার্টিকে ১২ বছর নেতৃত্ব দেওয়ার পর গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণার পরপরই শুরু হয়েছে তার উত্তরাধিকার নির্বাচনের লড়াইয়ের সূচনা। কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ তারই সবচেয়ে বেশি। খবর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের।
এ বিষয়ে জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, “সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টি তার উত্তরসূরি বাছাই করবে।”
তবে এখন পর্যন্ত কেউ ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেননি। তবে এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম আলোচনায় এসেছে।
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড
গত মাসে পদত্যাগ করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে আসেন কানাডার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। তবে পদত্যাগের পেছনের কারণ সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি লিবারেল পার্টির নেতা হওয়ার জন্য প্রার্থিতা করবেন।
এর আগে টরন্টোয় “দ্যা গ্লোব অ্যান্ড মেইল” এর জ্যেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে কানাডায় সফল ক্যারিয়ার ছিল ক্রিস্টিয়ার। এছাড়াও দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের নিউজরুমে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিজের ছাঁপ রেখেছেন তিনি। ক্রিস্টিয়া লিবারেল পার্টিতে যোগ দিতে ২০১৩ সালে কানাডায় ফিরে আসেন। পরে লিবারেল পার্টি কানাডার ক্ষমতায় আসার পর তিনি ট্রুডো প্রশাসনের জন্য বেশ কয়েকটি ইস্যু সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ডমিনিক লেব্ল্যাঁ
লিবারেল পার্টি থেকে ক্রিস্টিয়া পদত্যাগ করার পর কানাডার অর্থমন্ত্রী হন ডমিনিক লেব্ল্যাঁ। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দীর্ঘদিনের বন্ধু। অটোয়ায় ট্রুডো ও তার ভাইদের দেখাশোনা করতেন ডমিনিক। জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়ের ইলিয়ট ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ডমিনিকের বাবা রোমিও লেব্ল্যাঁ ছিলেন তার প্রেস সচিব। পরে তিনি কানাডার গভর্নর হন। এর কিছুদিন পর তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথের প্রতিনিধি হিসেবে হেড অব স্টেট নিযুক্ত হন।
ডমিনিক ২০০০ সালে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। অর্থমন্ত্রী হওয়ার পূর্বে তিনি জননিরাপত্তামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মেলানি জলি
কানাডার শীর্ষ কূটনৈতিকদের একজন হলেন মেলানি জলি। তিনি ২০২১ সাল থেকে এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে মেলানি জলিকে উৎসাহিত করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি কানাডা থেকে ছয় ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিলেন। চীন ও ভারতের আনা বিদেশি হস্তক্ষেপের অভিযোগও মোকাবিলা করতে হয়েছিল তাকে।
মার্ক কার্নি
মার্ক কার্নি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ব্যাংক অব কানাডার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন। কানাডার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রিস্টিয়াকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে গোপনের তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ট্রুডো। এরপর থেকে কার্নি দলের নেতৃত্বের জন্য লড়বেন কিনা, এ ব্যাপারে লিবারেল পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যদের সমর্থন ও পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।