ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক মাস পূর্ণ হলো আজ ২৪ মার্চ। ইউক্রেনে রাশিয়ার অনবরত এ হামলা উপলক্ষে আজ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বেশ কিছু ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ‘ন্যাটো প্রধান কী ঘোষণা করেছেন?’ এমন শিরোনামে বিবিসির লাইভ আপডেটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ন্যাটো প্রধান বলেছেন-
১. ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ‘এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সংকট’ এবং আমরা আমাদের জোটকে শক্তিশালী রাখতে এবং আমাদের জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে ঐক্যবদ্ধ আছি।
২. ন্যাটো রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ৪০ হাজার সৈন্যকে তার পূর্বদিকে সরিয়ে নিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছে।
৩. চারটি নতুন যুদ্ধদলকে স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়াতে পাঠানো হবে।
৪. স্টলটেনবার্গ আরও বলেছেন, সাইবার প্রতিরক্ষা জোরদার করা হচ্ছে এবং ন্যাটো ইউক্রেনকে ‘জৈবিক, রাসায়নিক, রেডিওলজিক্যাল এবং পারমাণবিক হুমকি’ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
৫. ইউক্রেনে পুতিনের আক্রমণ দীর্ঘমেয়াদে আমাদের নিরাপত্তা পরিবেশকে বদলে দিয়েছে এবং ন্যাটো ‘দীর্ঘ যাত্রার’ জন্য প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৫ হাজার ৮০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৩৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি