তুরস্কে গত ১৪ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় রবিবার (২৮ মে) ঐতিহাসিক রান অফ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ভোট নেওয়া শেষ হওয়ার পর এখন চলছে ভোট গণনা।
বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার পর তুর্কি সংবাদমাধ্যম ফল প্রকাশ শুরু করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চূড়ান্ত ফল পাওয়া যেতে পারে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ৫০ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভোট গণনা শেষে প্রকাশ করা ফলাফলে জানানো হয়, এরদোয়ান পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট। অপরদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ ভোট
প্রথম ধাপের নির্বাচনে এরদোয়ান তাঁর ২০ বছরের শাসনামলে প্রথমবারের মতো সরাসরি বিজয় থেকে বঞ্চিত হন। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ থেকে খুব সামান্য পেছনে ছিলেন এরদোয়ান। পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট।
নিজের টানা শাসনামলের তৃতীয় দশকে পা রাখার অপেক্ষায় ৬৯ বছর বয়সি এরদোয়ান। এই নির্বাচনে উতরে গেলে তার ইসলাম-কেন্দ্রিক শাসন ২০২৮ সাল পর্যন্ত বর্ধিত হবে।
তুরস্কের এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দীর্ঘ দুই দশক ধরে তুরস্কের রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি অনুপস্থিত। দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকা এরদোগান সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অভিযোগ এনেছেন অনেকে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণসহ বিরোধী মত দমনের অভিযোগও রয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসীরা চাইছেন কামাল কিলিচদারোগ্লুর জোট ক্ষমতায় ফিরে আসুক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বও চাইছে তুরস্কে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় আসুক। সৌদি আরবের সাথে দীর্ঘদিন ধরে চলা ইরান, সিরিয়া, কাতারসহ বেশ কয়েকটি দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় এরদোয়ানের ভূমিকা রয়েছে। বাইডেন প্রশাসন মনে করছে এতে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের একচেটিয়া প্রভাবে ভাগ বসিয়েছে তুরস্ক। তাই তারা এরদোয়ানবিরোধী শিবিরকেই ক্ষমতায় দেখতে চায়।
নির্বাচনে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে লড়ছে ছয়টি বিরোধী দলের জোট ন্যাশনাল এলায়েন্স। নেতৃত্বে রয়েছেন আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।