অধিকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের আহবান জানাল অ্যামনেস্টিসহ ১৯ মানবাধিকার গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১১, ২০২৩, ০৫:০০ এএম

অধিকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের আহবান জানাল অ্যামনেস্টিসহ ১৯ মানবাধিকার গ্রুপ

অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমানকে ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার করা হয় । ফাইল ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে ১৯টি মানবাধিকার গ্রুপ। এই তালিকায় রয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো বিশ্বের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা।

২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনে পুলিশ। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই অভিযোগের শুনানির প্রায় শেষ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরকারের কাছে অভিযোগ প্রত্যাহারের আহবান জানালো।

বৃহস্পতিবার এব বিবৃতিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের কর্মীদের প্রতি অপরাধীকরণ প্রবণতা ও হয়রানি বন্ধ করা উচিত। ‘অধিকার’ কর্মীদের বিচার শেষ পর্যায়ে থাকার সময়ই মানবাধিকার সংগঠনগুলো ওই বিবৃতি দিলো।

২০১৩ সালের ৫-৬ মে ঢাকার মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ এবং সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানকে ঘিরে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগে গোয়েন্দা পুলিশ মানবাধিকার সংগঠন, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে গ্রেপ্তার করে। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান তিনি।

ওই বছরের ৫ই মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল অধিকার। পুলিশ বলছে, সেই প্রতিবেদনটিতে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল।

২০১৩ সালে হেফাজতের শাপলা চত্বরে সমাবেশে পুলিশের সাত সদস্যসহ ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। পরে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি সংগঠনটি।

এ ঘটনায় একই বছর ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম।

একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তৎকালীন উপপরিদর্শক আশরাফুল আলম আদিলুর রহমান ও নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার করার অভিযোগে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্যমহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহা মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠান।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিবৃতিতে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ঘটনার ১০ বছর পর এখন  আদিলুর রহমান ও নাসিরুদ্দিন এলানের বিরেুদ্ধে ‘ভুয়া, বিকৃত ও মানহানিকর’ প্রতিবেদন প্রকাশের দায়ে বিচার শুরু হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আদিলুর রহমান ও নাসিরুদ্দিন এলানের আইনজীবীরা বিচারিক হয়রানির অভিযোগ করে বলেছেন, এই অভিযোগটি ঢাকার সাইবার ট্র্যাইবুনাল অযথাই সমর্থন করছে।

বিবৃতিতে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ‘আমরা এই সাহসী দুই মানবাধিকার কর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছি এবং বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর দেওয়াদের মধ্যে দ্য এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন এবং রবার্ট এ কেনেডি হিউম্যান রাইটস রয়েছে।

Link copied!