হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য সব কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। সংবেদনশীল তথ্য হওয়ায় ইরানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্সের খবরে বিষয়টি জানানো হয়।
ইরানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমেও রাইসি নিহতের খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: কে এই ইব্রাহিম রাইসি?
ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন
আকস্মিক ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। প্রথমত ইরানের রাজনীতিতে কী হবে? দ্বিতীয়ত কে হবেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট?
উত্তর খুঁজতে গিয়ে যে নাম সবার আগে বলা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে মোহাম্মদ মোখবারের নাম। ইরানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ইরানের সংবিধানে বলা আছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে ও নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্টই।
তবে যিনিই নতুন প্রেসিডেন্ট হন না কেন, তাকে অনুমোদন নিতে হবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ক্ষমতা কাঠামোয় এরপরই আছেন প্রেসিডেন্ট। তাকে সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রাইসির মৃত্যুতে খামেনির অনুমোদনসাপেক্ষে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের ইরানের পরবর্তী কাণ্ডারি হওয়ার পথ খুলে গেছে বলা যায়।
আরও পড়ুন: রাইসির পর কে হবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
আগে ইরানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছিল। ১৯৮৯ সালে তা বিলুপ্ত করা হয়। সরকারে প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদে বসানো হয় একজন ভাইস প্রেসিডেন্টকে। তবে প্রেসিডেন্টের মতো এই পদে কাউকে নির্বাচিত হতে হয় না, নিযুক্ত করা হয়।
একনজরে মোহাম্মদ মোখবার
২০২১ সালের আগস্টে ইরানের প্রেসিডেন্ট হন ইব্রাহিম রাইসি। এর পর পরই খামেনির অনুমতিসাপেক্ষে মোহাম্মদ মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংবিধান সংশোধনের পরবর্তী সময়ে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ মোখবার।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মোহাম্মদ মোখবার ইরানের সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট। মূলত দাতব্যকাজের জন্য এই প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে পরিচিত। সর্বোচ্চ নেতার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটা পরিচালিত হয়।
মোহাম্মদ মোখবারের নজরদারিতে সিতাদ করোনার নিজস্ব টিকা ‘কোভিরান বারেকাত’ তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়েছিল। যদিও এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই টিকা নেওয়ার পর অনেকেই জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগেছেন।
একসময় ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মোহাম্মদ মোখবার।