গুলশান-বারিধারায় লোডশেডিং দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১০, ২০২৪, ১২:৪৫ এএম

গুলশান-বারিধারায় লোডশেডিং দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

সংসদে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও

গ্রামে লোডশেডিং কমিয়ে রাজধানীর গুলশান-বারিধারা-বনানীর মতো বড়লোকদের এলাকাগুলোতে লোডশেডিং দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকেও তার নিজের এলাকায় লোডশেডিং দিতে বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলছিলাম, ১ হাজার বা ২ হাজার মেগাওয়াট যেদিন লোডশেডিং হবে , গ্রামে লোডশেডিং আর দিবে না। দেবা গুলশান, বারিধারা, বনানী বড় লোকদের জায়গায়। যারা সব থেকে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।”

সরকার প্রধান বলেন, “(অভিজাত এলাকায়) বাড়িতে লিফট, বাড়িতে টেলিভিশন, বাড়িতে এয়ারকন্ডিশন, তাদের একটু দুই ঘণ্টা করে (লোডশেডিং) দিলে আমার অনেক সাশ্রয় হয়। আমার কৃষকের অভাব হবে না। এখন থেকে সেটাই করবো। প্রতিমন্ত্রীকে বলছি, তুমি যেখানে থাক সেখানে লোডশেডিং দেখতে চাই। সেখানে লোডশেডিং দিতে হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “হ্যাঁ লোডশেডিং। যে প্রচণ্ড গরম। সেখানে লোডশেডিং হয়েছে। আমরা সেটা স্বীকার করি। কিন্তু কৃষক যেন সেচটা পায়- সেখানে কিন্তু ভর্তুকি দেয়া হয়। সেখানে কোন অভাব হয়নি।”

বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকার বিদ্যুত কেন্দ্র বহুমুখী করেছে। এখানে সোলার প্যানেল হচ্ছে। বায়ুভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র শুরু করেছি। কয়লাভিত্তিক করছি। তেলভিত্তিক-গ্যাসভিত্তিক সবই করছি। মানুষকে বিদ্যুত দিতে চাই। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আমরা দিয়েছি।”

বাংলাদেশে রাস্তা নির্মাণে খরচ বেশি বলে যারা সমলোচনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ প্রশ্ন ওঠায় বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন? এদের দেশের মাটি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মাটির সাথে এদের কোন সম্পর্কই নেই। আমাদের মাটি এটা একটা ব-দ্বীপ। এ মাটি দো’শলা। যাকে বলে জোবা মাটি। এ মাটি নরম। এখানে কোন কিছু করতে গেলে। ওই যেনতেন করতে করতে গেলে দুই-চারদিনের বেশি থাকে না।”

শেখ হাসিনা বলেন, “সেখানে আমরা মাটি তুলে আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা তৈরি করছি। রাস্তা যখন চড়েন দেখেন না? খরচ তো লাগবে। যেখানে শক্তমাটি সেখানে অত খরচ হয় না। নরম মাটি বলেই খরচ বেশি। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ মেট্রোরেল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন? এর কী প্রয়োজন ছিলো। ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে তো যানজটমুক্ত হতো। আজকে প্রতিঘন্টায় ৬০ হাজার মানুষ মেট্রোরেল দিয়ে চলতে পারে। এটায় যারা চড়ছে তারা সুফল পাচ্ছে। যারা এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল- তারা লজ্জা পাচ্ছে কী না জানি না।”

বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন চিত্রের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ১৫ বছরে যে পরিমান কাজ করতে পেরেছি। ওই ২১ বছর আর ৮ বছর। এই ২৯ বছরে কেউ করতে পেরেছে? পারেনি। পারবেও না। প্রকল্প দিয়েই তো আগে টাকা খাওয়া। আর আমরা প্রজেক্ট শেষ করে ছাড়ি। টাকা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “জনকল্যাণে করণীয়ের দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করি। দেশের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ভোগ করবেন সবাই আর কথায় কথায় ব্যাংগো করবেন আর প্রশ্ন তুলবেন। প্রশ্ন তোলার আগে- নিজেরা কী করেছেন? কোন দল করেন- সেই দলের বৃত্তান্ত থেকে শুরু করে অপকর্মগুলি একটি চিন্তা করে নেবেন।”

প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রাখেন দ্বাদশ সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এ সময় সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

Link copied!