আবারও পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, ২০ বছর ধরে ভুগছেন এক নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ৪, ২০২২, ০৫:০৩ এএম

আবারও পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, ২০ বছর ধরে ভুগছেন এক নারী

বাচেনা খাতুনের (৫০) পেটে পাথর অপসারণের জন্য চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারটি হয়েছিল ২০০২ সালের দিকে। এত দিন বাচেনা খাতুন ভালোই ছিলেন। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে তার পেটের মধ্যে যন্ত্রণা ও ব্যথা অনুভূত হতে শুরু করেন। রাজশাহীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করার পর তিনি জানতে পারেন, তার পেটের ভেতরে কাঁচি রয়েছে।

ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঢিৎলা ইউনিয়নের নওদাহাপানিয়া গ্রামের আবদুল হামিদের স্ত্রী। পেটে কাঁচি রেখে অস্ত্রোপচারের ঘটনাটি ২০ বছর আগে ঘটেছিল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরের রাজা ক্লিনিক নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বাচেনা খাতুন সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বাচেনা খাতুন বলেন, এত দিন ধরে পেটের ভেতর মাঝেমধ্যে যন্ত্রণা করলে স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে গ্যাসের ও ব্যথার ওষুধ কিনে খেয়েছেন। কয়েক দিন আগে পেটে অসহনীয় ব্যথা শুরু হলে রবিবার রাজশাহীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার জন্য যান। পরে সেখানে এক্স-রে করে চিকিৎসক দেখতে পান, পেটের মধ্যে কাঁচি রয়েছে।

বাচেনা খাতুনের এক্স-রে চিত্রটি দেখেছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুর রেজা। জাহিদুর রেজা বলেন, “বাচেনা খাতুন তাঁর কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁর পেটের ভেতরে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত কাঁচি রয়েছে। তাঁকে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে কাঁচিটি অপসারণ করতে হবে। আপাতত তাঁকে ওষুধপথ্য দেওয়া হয়েছে।”

অভিযুক্ত রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ও চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন ওরফে রাজা বলেন, “মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। মানুষের ভুল হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দোষ এড়ানো যায় না। যদিও তখন কর্মরত চিকিৎসক মিজানুর রহমান বাচেনা খাতুনের অপারেশনটি করেছিলেন। তিনি ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুন ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বিষয়টির সুরাহা করতে চান।”

Link copied!