তত্ত্বাবধায়ক নয়, দলীয় সরকার চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব: চুন্নু

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১১, ২০২২, ০৩:১০ এএম

তত্ত্বাবধায়ক নয়, দলীয় সরকার চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব: চুন্নু

দলীয় সরকার অথবা কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। দলীয় সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব বলেও তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১০ নভেম্বর ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় জাপা মহাসচিব এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা জাতীয় পার্টি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘যে দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি আস্থা নেই, সেই দল অনির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারায় নির্বাচন করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এমন আস্থার কোনো যুক্তি নেই। আর জাতীয় পার্টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা বিশ্বাস করে না। তবে দলীয় সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।’

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘গত ৩২ বছরে দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে সবগুলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি যা বিএনপি-আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে। আগামীতে ৩০০ আসনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবে, সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।’

জাতীয় পার্টির কাছে ১০ নভেম্বর ঐতিহাসিক দিন-উল্লেখ করে জাপা মহাসচিব আরও বলেন, ‘ওই দিন সংসদে বিল পাসের মাধ্যমে দেশ থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা করি। সেদিন এরশাদ সাহেব বলেছিলেন- সেনাবাহিনী আর কখনই এদেশের ক্ষমতায় আসবে না। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বরের পর থেকে আজও সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেনি। দেশে বহু ঘটনা ঘটেছে, সেনাবাহিনী ইচ্ছে করলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চাইলে আসতে পারতো কিন্তু আসেনি। আর কখনই সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। তাই ১০ নভেম্বরকে আমরা ‘গণতন্ত্র দিবস’ বলি।’

মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘গত ৩২ বছর যেসব দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সৈরাচার বলেছিল, গণতন্ত্র কায়েমের জন্য আন্দোলন করেছিল, যারা বলেছিল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করবে, নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করবে, সুশাসন দেবে, দুর্নীতি দূর করবে, সাংবিধানিক অধিকার মানুষকে দেবে।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে প্রশ্ন গত ৩২ বছর এদেশ শাসন করেছে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। দুটি দলেই পালাক্রমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দেশে কোনো সুশাসন দিতে পারেনি। বিএনপির আমলে হাওয়া ভবন তৈরি করা হয়েছে, বিদ্যুতের জন্য মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সারের জন্য কৃষকে হত্যা করা হয়েছে। সমস্ত কিছু দলীয় করণ করে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ আজকে দুর্নীতি করে দেশের বারোটা বাজিয়েছে। দেশের যেখানেই যাই দুর্নীতি আর দুর্নীতি ছাড়া কিছুই নেই। কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে।’

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব ফকরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন।

Link copied!