ফাঁকা রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ: ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ২৭, ২০২৩, ১১:৩৬ পিএম

ফাঁকা রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ: ডিএমপি কমিশনার

ফাইল ছবি

ঈদুল আজহার ছুটি চলাকালে অনেকেই ঢাকা ছেড়ে বাড়িতে যায় পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ করতে। সে সময় ঢাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। এই ফাঁকা রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। এজন্য ঈদে পেশাদার অপরাধীরা যেন জামিনে মুক্ত হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড না ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা পরিদর্শন করে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত এক মাস যাবত পেশাদার অপরাধী, সিঁদেল চোর, ছিনতাইকারী, মলম ও অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। আজকে পর্যন্ত ৬০০ জন পেশাদার অপরাধী গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের আগে যেন আসামিদের জামিন না হয়, সে ব্যবস্থার চেষ্টা করব। পেশাদার আসামিরা জেলের মধ্যে থাকলে ফাঁকা ঢাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা তেমন একটা ঘটবে না।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ফাঁকা ঢাকাতে উঠতি বয়সের অনেক তরুণ মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার রেসিং করে। আমি এই বিষয়ে কঠোরভাবে বলছি, এই ধরনের রেসিং করবেন না। ফাঁকা রাস্তায় যেন এই ধরনের রেসিং না করতে পারে সেজন্য ব্যারিকেড তৈরি করে জিগজ্যাগ গতিতে গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা করব।

সড়ক দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে নগর পুলিশপ্রধান বলেন, প্রতিবছর ঈদের পরে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়। এই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে আমরা দেখেছি যে, ড্রাইভাররা ট্রিপ নিয়ে বাড়িতে রেস্টে থাকেন। হেলপারদের গাড়ি দিয়ে দুই চারটা ট্রিপ মারতে বলেন। হেলপাররা যখনই বাস-ট্রাক নিয়ে রাস্তায় বের হয়, তখনই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের বলব, ঈদের পরে যে কয়দিন ড্রাইভার ছুটিতে থাকবে সে কয়দিন যেন গাড়ি বন্ধ থাকে। কোনো হেলপার যেন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় না নামে। কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, এ বিষয়ে আপনারা সচেষ্ট থাকবেন। গত ঈদে আমরা সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কমিয়ে নিয়ে এসেছি। আশা করব এই ঈদে দুর্ঘটনা পরিমাণ কমে আসবে।

গরুর হাটের বিষয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, ঢাকা শহরে গরুর হাট করার মতো খোলা মাঠ তেমন একটা নেই। তারপরও ঢাকাবাসীর সুবিধার্থে আমাদের দুই মেয়র ২১টি গরুর হাটের ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের গরুর হাট ম্যানেজ করেই যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। গাবতলীর হাটে দেখবেন গরুর জন্য গাড়ি চলাচলের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হাটের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছি। প্রতিটি হাটে হাসিল ঘরে টাকা দেওয়াসহ জাল টাকা শনাক্ত করার জন্য মেশিনের ব্যবস্থা করেছি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গরু ব্যবসায়ীদের নগদ টাকা নিয়ে যেন বাড়ি যেতে না হয় সেজন্য অস্থায়ী ব্যাংকের ব্যবস্থা করেছি। হাটগুলোতে অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য যেন না থাকে সেজন্য আমরা সচেতনতা বাড়িয়েছি। কোরবানির ঈদ এলে জাল টাকা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্ক। গত পরশু দুই কোটি জাল টাকাসহ চক্রটিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ঈদুল আজহায় তিন গুণ চ্যালেঞ্জ। ঈদুল ফিতরে শুধু ঘরমুখো মানুষ ছিল। এখন (ঈদুল আজহায়) ঘরমুখো মানুষ আছে উল্টো দিক থেকে গরুর গাড়ি এবং রাজশাহী ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফলবাহী গাড়ি আসছে। এ কারণে আমাদের চ্যালেঞ্জ একটু বেশি। এর সঙ্গে আরেকটি পরিবেশ যোগ হয়েছে, সেটা হচ্ছে বৃষ্টি। চতুর্মুখী চাপ থাকা সত্ত্বেও সবার সার্বিক সহযোগিতায় সবকিছু ঠিক আছে।

Link copied!