বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর কোথায় ছিল মানবাধিকার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩, ১২:৪৯ এএম

বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর কোথায় ছিল মানবাধিকার?

 

দেশের সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যারা কথা বলেন তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তাদের উদ্দেশ্যে লিটনের প্রশ্ন- পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান পেছনে থেকে তার লোকদের মাধ্যমে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তখন মানবাধিকার কর্মীরা কোথায় ছিলেন?

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে সচেতন নাগরিক সমাজ ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

‘১৯৭১, ’৭৫, সামরিক শাসনামল, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দাবি করে ওই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরাও বক্তব্য রাখেন।

‘বিএনপি- জামাত ও তাদের আন্তর্জাতিক দোসর- আমাদের মানবাধিকারের কি হবে? জবাব চাই’ শিরোনামে এই বিক্ষোভ সমাবেশের পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তারানা হালিম।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “মানবাধিকারের ব্যবসা যারা করেন তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করতে চাই, ১৯৭১ সালে ত্রিশ লক্ষাধিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা এবং পরবর্তীতে ‘৭৫ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা এবং পরবর্তীতে বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তাকে হত্যা করা, জিয়াউর রহমান পেছনে থেকে তার লোকদের মাধ্যমে যখন অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার?”

জাতির পিতার দুই কন্যা যখন দেশের বাইরে অনেক কষ্ট নিয়ে, অনেক দুঃখ নিয়ে, অনেক সমস্যা নিয়ে বসবাস করছিলেন, সেই সময় মানবাধিকারের কথা ওঠে নাই। আমাদের জাতির পিতাকে হত্যার পর আওয়ামী লীগকে ৫টি বছর জিয়াউর রহমান ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীরকে গুম-খুন করেছিল। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার?

৩ নভেম্বর পিতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আমার ছোট বোনের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সে কিছু বুঝতো না। আমার পিতার সবচেয়ে প্রিয় সন্তান তার পিতাকে হারিয়ে একেবারে স্তব্ধ হয়েছিল, সে শুধু তাকিয়ে দেখতো বাবা কোথায়? কেন তার বাবা আসছে না? মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলেন, তখন তাদের আমরা দেখিনি।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কিছু হলেই যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন খুঁজে পান, সেই কথাকথিত সুশীল সমাজকে বলতে চাই, মানবাধিকারের কথা আপনাদের মুখে শোভা পায় না। দেশের জন্য ক্ষতিকর কাজগুলোকে আপনারা সার্পোট দেন আর ভালো কাজ সেগুলোকে সার্পোট দেন না। যখন বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা ঘটে গেছে, সেই সময় আপনাদের আমরা পাশে পাইনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, যারা বিভিন্ন সংগঠন বা সংস্থার নামে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন, যারা নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে চান, বিদেশীদের যারা প্রভাবিত করতে চান, বিদেশী দূতাবাসের মাধ্যমে নানা বানোয়াট কথা-বার্তা ও চিঠি দিয়ে বলতে যারা বলতে চান, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চর্চা নেই ও বিরোধী দলকে দমন করা হচ্ছে’, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা যদি এটিকে বিরোধী দলকে দমন করা বলতে চান তাহলে বিরোধী দল দিনের পর দিন পদযাত্রা, বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করছে কীভাবে?

Link copied!