বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট না কি ইচ্ছাকৃত আগুন!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৫, ২০২৩, ০৬:০৮ পিএম

বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট না কি ইচ্ছাকৃত আগুন!

রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ বলছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে আবার কারও মন্তব্য- আগুন লাগানো হয়েছে। এভাবেই আগুনের উৎস নিয়ে সৃষ্টি হয়ে ধোঁয়াশার। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে গাফিলতি অভিযোগ এনেছে দোকানমালিক ও কর্মচারীরা।

পাশাপাশি হওয়ায় আদর্শ, মহানগর, বঙ্গ ও গুলিস্তান মার্কেট একসাথে বঙ্গবাজার নামে সবার কাছে পরিচিত। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোরে এ মার্কেটে আগুন লাগে। সিকিউরিটি গার্ড ও ইলেকট্রিশিয়ানরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। দীর্ঘ সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।

ফজরের নামাজের পরই আগুন লাগার খবর জানতে পারেন বলে জানান মহানগর মার্কেটের সিকিউরিটি ইনচার্জ মো. দলিল উদ্দীন। তিনি বলেন, আদর্শ মার্কেটের তিনতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ৫-৬ জন সিকিউরিটি গার্ড ও মার্কেটে থাকা ইলেকট্রিশিয়ানরা গ্যাস (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) মেরে আগুন থামানোর চেষ্টা করি। সম্ভব না হওয়ায় খাবার পানির বোতলের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন তারা।

মহানগর মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ড মো. নাজিম বলেন, আমরা আগুন নেভানোর জন্য ৮-৯টা গ্যাস ব্যবহার করেছিলাম। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। পরে কয়েকজন মিলে গেটের এপার থেকে ডাক দিয়ে বলি আগুন লেগেছে।

ফায়ার সার্ভিস আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা খবর পাওয়ার পর এসেছে। কিন্তু তারা পানি দিতে দেরি করেছে। তাদের পানির কোনো গতি ছিল না। একপর্যায়ে তারা পানির সংকটের কথা জানান।

কীভাবে আগুন লেগেছে জানতে চাইলে নাজিম বলেন, আমার যতদূর ধারণা, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। কারণ, তখন মার্কেট বন্ধ ছিল। অন্যভাবে আগুন লাগার কারণ দেখি না।

এদিকে আগুন লাগার বিষয়ে ভিন্নকথা জানান মহানগর মার্কেটের ইলেকট্রিশিয়ান মো. সুমন মিয়া। তিনি বলেন, মার্কেট বন্ধ হওয়ার পরও মার্কেটের ভেতরে বিদ্যুৎ থাকে। কিন্তু এটা শর্ট সার্কিট থেকে লেগেছে বলে মনে হয় না। যদি শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে, তাহলে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত না। আমার মনে হয় কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসকে বলার ২০ মিনিট পর তারা এসেছে। যদিও তাদের অফিস আমাদের পাশেই। এরপর তারা শুধু কয়েকটি গ্যাস নিয়ে আসে। কিন্তু পানি দেয়নি। পানির সংকটের কথা জানিয়েছিল তারা।

আদর্শ মার্কেটের মায়ের দোয়া মার্কেটের মালিক লিপি আক্তার বলেন, আমি যখন আসি, তখনও আমার দোকানে আগুন পৌঁছায়নি। ফায়ার সার্ভিস আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। যদি ঢুকতে দিত, তাহলে আমরা আগুন নেভাতে ও মালামাল বাঁচাতে পারতাম। আমাদের আটকিয়ে রাখা হলেও তারা পর্যাপ্ত পানি দেয়নি। তাদের এত বড় বড় গাড়ি, এগুলো সকালে তো দেখিনি।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। উৎসুক জনতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে।

Link copied!