বঙ্গবাজারে আগুন: কারও পুড়ছে স্বপ্ন, কারও পোয়াবারো!

মাহাবুব আলম শ্রাবণ

এপ্রিল ৪, ২০২৩, ১১:১৩ পিএম

বঙ্গবাজারে আগুন: কারও পুড়ছে স্বপ্ন, কারও পোয়াবারো!

মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে দেশের অন্যতম বড় পাইকারী মার্কেট বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে বঙ্গবাজারের বেশ কয়েকটি মার্কেটে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে প্রায় ৫ হাজার দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি করেছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটের দোতলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত। ঈদের আগে এতো বড় ক্ষতি তাদের পথে নামিয়ে দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “আমার দোকানে সব দামি দামি পাঞ্জাবি ছিল। সব চোখের সামনে জ্বলছে ভাই। আমার বঙ্গবাজারে দুই দোকান আর ইসলামিয়ায় দুই দোকান। চার দোকানের সব কিছুই শেষ।

সামনে ঈদ, তাই দোকানগুলোতে দামি পাঞ্জাবি ওঠানো হয়েছিল জানিয়ে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, “হাজার হাজার পিস পাঞ্জাবি ভাই। সব দামি দামি পাঞ্জাবি তুলছিলাম। চোখের সামনে সব জ্বলতাছেরে ভাই। কী করে সহ্য করবোরে ভাই। কী করবো ভাই, আমার মাথায় ধরে না।”

আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, সব শেষ করে দিছেরে ভাই। এক কোটি টাকার বেশি পাঞ্জাবি কালেকশন করছি। সব শেষ ভাই।

আগুনের দিকে দেখিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ওই ব্যবসায়ী বলেন, “চোখের সামনে টাকা পুড়ছে ভাই। চোখের সামনে কীভাবে জ্বলেরে ভাই।

মো. কামাল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “ভোরে ম্যানেজার তাকে জানায় বঙ্গবাজারের কোনো এক মার্কেটের উপরের কোথাও আগুন লেগেছে, ভেতরে ঢোকা যাচ্ছে না। কোনো মালামালই সরাতে পারেনি কর্মচারীরা। তার মতো বঙ্গবাজারে আরও পাঁচ হাজারের মত দোকানিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান কামাল।

তিনি জানান, ঈদ সামনে রেখে বঙ্গবাজার ও আশপাশের মার্কেটের সব দোকানেই প্রচুর নতুন পণ্য তোলা হয়েছিল। কীভাবে সেখানে আগুন লাগলো তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিকে, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকালে আগুন লাগার পর ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের কাউকে কাউকে মরিয়া হয়ে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। অসহায়ভাবে কাঁদছিলেন অনেকে।

আগুন নেভার পর অনেককেই দেখা গেছে কাপড় কুড়াতে। আগুন লাগার সময় বস্তাভর্তি যেসব কাপড় বের করে রাস্তায় রাখা হয়েছিলো, আগুন নেভার পর অনেককেই দেখা যাচ্ছে সেই কাপড় কুড়াতে। অনেকে আবার ভেজা এবং পুড়ে যাওয়া কাপড়গুলো থেকে বেছে বেছে তুলে নিচ্ছেন ভালোটা। এ দৃশ্য দেখে দু’এক জনকে বলতে শোনা যায়-কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ।

Link copied!