ভারতে ১২ বাংলাদেশি ‘জিহাদী’ গ্রেপ্তার, হামলার চেষ্টা নস্যাতের দাবি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২২, ০৩:৩৩ এএম

ভারতে ১২ বাংলাদেশি ‘জিহাদী’ গ্রেপ্তার, হামলার চেষ্টা নস্যাতের দাবি

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আগের নাম আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এবিটি) ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আসাম রাজ্য পুলিশ।রাজ্যের বরপেটা ও মরিগাঁও জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।পাশাপাশি আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও ৭ ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বরপেটা ও মরিগাঁও জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মাও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,‘জাতীয়ভাবে সমন্বিত অভিযান’ চালিয়ে রাজ্যে দুটি বড় মডিউল (জিহাদি হামলা) নস্যাৎ করা হয়েছে।“

এর আগে, বুধবার (২৭ জুলাই) আনসার আল ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার পাখিউরা গ্রাম থেকে আব্বাস আলী ওরফে মোস্তফাকে (২২) একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ভারতের অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজ১৮ ডটকম এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি ওই মাদ্রাসাটি তিনি পরিচালনা করছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামের বঙ্গাইগাঁও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুনা সোনোয়াল বলেছেন,“আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের(এবিটি)অন্যতম সদস্য আলী মেহবুব নামে এক পলাতক বাংলাদেশি সদস্যকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। গ্রেপ্তার আব্বাস আলী ওরফে মোস্তফা তাকে মোবাইলের একটি সিম কার্ড ও লজিস্টিক সাপোর্টও দিয়েছিলেন।” এবিটি’র আরও কোনো সদস্যের সঙ্গে আব্বাস আলী  যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান লুনা সোনোয়াল।

গ্রেপ্তার আব্বাস আলী ওরফে মোস্তফা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের(এবিটি)অন্যতম সদস্য আলী মেহবুব নামে এক পলাতক বাংলাদেশি সদস্যকে আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে অসাম রাজ্য পুলিশের অভিযোগ। ছবি: assam.eastmojo.com

বঙ্গাইগাঁও জেলার অতিরিক্ত এই পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের আরও বলেন, “মৌলবাদে জড়িত আলী মেহবুব এবিটি’র একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং তিনি এখানকার অনেককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আমরা আলীর মাধ্যমে মেহবুবের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। স্থানীয় যুবকদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশপাশি মেহবুব যুবকদের জিহাদি বই-পুস্তক পড়তে উদ্বুদ্ধ করতেন।” মেহবুব এলাকায় প্রথম সারির স্লিপার সেল (মুজাহিদ) গঠনে সহায়তা করছিলেন বলেও জানান বঙ্গাইগাঁও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

তবে মরিগাঁও জেলার পুলিশ সুপার অপর্ণা নাতারজন’র বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার মোস্তফার বিরুদ্ধে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় দুই সদস্য আমিরুদ্দীন আনসারি ও মামুন রশিদের সঙ্গে ২০১৯ সালে বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার সাথে আনসার আল ইসলাম সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজধানী গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের জানান, “মাদ্রাসাটি ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনা করা হতো। এটি বন্ধ করা হয়েছে।আসামে সব সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে।”

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসামের মূখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন,“রাজ্যে আনসারুল ইসলাম জঙ্গিদের সক্রিয় হওয়ার খবর পেয়ে কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে আনসার আল ইসলামের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ২০জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ।

ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ভাস্কর জ্যেতি মহন্ত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আনসার আল ইসলামের সদস্যরা ব্লগার, শিল্পী, কবি এবং যারা উগ্র মৌলবাদ অনুসরণ করে না তাদের হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন।

Link copied!