লঞ্চ থেকে বেঁচে ফিরে যা বললেন পাথরঘাটার ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৪, ২০২১, ১০:১৫ পিএম

লঞ্চ থেকে বেঁচে ফিরে যা বললেন পাথরঘাটার ইউএনও

এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বীভৎস ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ।

ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বরগুনা অভিমুখী অগ্নিকাণ্ডের শিকার সেই লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে গিয়ে সেই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন তিনি।

লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় ভিআইপি কেবিনে ছিলেন ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ ও তার স্ত্রী উম্মুল আরা।

পড়ুন: লঞ্চ থে‌কে লা‌ফি‌য়ে স্ত্রীসহ প্রা‌ণে বাঁচ‌লেন ইউএনও

ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, রাত তিনটার দিকে হঠাৎ করে লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় তাদের ভিআইপি কেবিনসহ আশপাশ এলাকায় ধোঁয়ায় নাক বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের চিৎকারে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হয়। সেসময় তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত লঞ্চের সামনের দিকে যান।

এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উম্মুল আরাকে নিয়ে কত দ্রুত ও কীভাবে যে লঞ্চের সামনের দিকে নেমে এসেছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। এরই মধ্যে ঝালকাঠির দিয়াকুল গ্রামে নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হলে আমরা দ্রুত নেমে পড়ি। এ সময় কয়েক শ মানুষ লঞ্চ থেকে নামতে পারলেও বেশির ভাগ মানুষ লঞ্চে আটকা পড়ে যায়। অনেককে দেখা গেছে, নিজের প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। প্রচণ্ড শীতের রাতে তারা নদী সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন কি না, তা স্বজনেরাও বলতে পারছেন না।”

আরও পড়ুন: ঘাটে ভেড়ার ১০-১৫ মিনিট আগে লাগে আগুন, মৃত বেড়ে ৪০

ইউএনও আরও বলেন, “অনেককে দেখা গেছে, লঞ্চ থেকে নামার সময় তার শিশুসন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সময় তারা আবার লঞ্চের দিকে দৌড়ে গিয়ে আগুনে আটকা পড়ে যান। এ অবস্থায় লঞ্চে শিশু, নারীসহ যাত্রীদের চিৎকারে এক বীভৎস অবস্থার তৈরি হয়।”

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০। লঞ্চটি রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লঞ্চে প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ যাত্রী ছিল। বহু হতাহত হয়েছেন।

Link copied!