সংবিধান পাল্টে নির্বাচন করার মতো সংকটে পড়িনি: কাদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৬, ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম

সংবিধান পাল্টে নির্বাচন করার মতো সংকটে পড়িনি: কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়; সেভাবে এখানেও হবে। সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচন করতে হবে, সেই সংকটে আমরা পড়িনি। 

সোমবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন তিনি।

আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাউকে আলোচনার জন্য ডাকা হচ্ছে না। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দেয়া হবে। তখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশ পরিচালিত হবে। সংবিধানের মধ্যে থেকে তারা নির্বাচন পরিচালনা করবে।

বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কোনো আলোচনা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘আমরা যা করি প্রকাশ্যে করি; গণতন্ত্র ব্যাকডোরে আলোচনার বিষয় না, সেটা হলে প্রকাশ্যেই হবে। তবে সেই সুযোগ এখনও দেখছি না। আমরা কাউকে আলোচনার জন্য ডাকছি না। নির্বাচনকে সমানে রেখে এ ধরনের সংকট আমাদের দেশে নতুন নয়। কালো মেঘ ঘনীভূত হলেও তা কেটেও গেছে। আমি আশাবাদী মানুষ, আমি মনে করি এ সংকট কেটে যাবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র আছে, নির্বাচন আছে। সরকার আছে, বিরোধীদল আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটেনি যার জন্য সংবিধান পরিবর্তন করে কোনো প্রকার বিকল্প প্রস্তাব কারও অনুকূল সমর্থন করার সুযোগ নেই। আমরা কোনো পরিস্থিতিতে সংবিধানের প্রশ্নে ছাড় দেব না। সংবিধানের মধ্যেই সমাধান খুঁজতে হবে। এর বাইরে কোনো প্রস্তাব আমরা গ্রহণ করব না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়; সেভাবে এখানেও হবে।

‘তাদের অবস্থানটা কী? তাদের অবস্থান ক্ষমতায় যাওয়া না। তাদের অবস্থান শেখ হাসিনাকে হটানো। ক্ষমতায় যাওয়া তাদের লক্ষ্য নয়। বিএনপি লক্ষ্য একটাই, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটানো।’

বিএনপির আন্দোলন ও অর্থনৈতিক সংকটে কোনটি বড় চ্যালেঞ্জ এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন বাস্তবে যত গর্জে, ততটা বর্ষে না। কারণ তারা ছিল একটি গণঅভ্যুত্থানে আশায়, সেখান থেকে নেমে এল নীরব পদযাত্রায়। এখন তারা সেখান থেকে নিঃশব্দ মানববন্ধনে নেমে এসেছে। তাদের আন্দোলনের গতি দেখলে বোঝা যায়, তারা যতটুকু জনগণের অংশগ্রহণ আশা করেছিলেন তা হয়নি। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো গণআন্দোলন সম্ভব না। তাদের নেতাকর্মীদের দিয়ে মূলত আন্দোলন ছিল, সেটিও এখন কমে গেছে। তাদের আন্দোলনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছি না। তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।

অর্থনৈতিক সংকট আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল বলেন, এটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অচীরেই থেমে যাবে সে লক্ষণ নেই। সেই যুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা এখনও চলছে। এর ফলে সারা দুনিয়ায় সংকট আছে। জনজীবন, তেলের দাম, ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক সংকট আছে। বাংলাদেশেও সংকট আছে। সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এখানে পরিস্থিতি সামাল দেয়াই একটা চ্যালেঞ্জ। আমাদের জনগণ অনেক ধৈর্যশীল। সরকারের সদিচ্ছার প্রতি জনগণের আস্থা আছে। বিরোধীদল উসকে দিলেও মানুষ তাতে অংশগ্রহণ করেনি। মানুষের জানমাল রক্ষায় সরকারের আন্তরিক প্রয়াসে জনগণের আস্থা আছে, তাই কোনো গণঅভ্যুত্থানের সম্ভাবনা নেই।

কথা বললেই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়– বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এ অভিযোগের বিষয়ে কাদের বলেন, কথা বললেই মামলা দেয়, প্রমাণ কী? তারা তো দেশে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার, সেই স্লোগানও দিচ্ছে। প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আক্রমণ করছে, তারপরও কি তাদের নেতারা জেলে আছে? যার যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে।

কাদের বলেন, তারা একাত্তরের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। বিএনপির আন্দোলন মানেই আগুন সন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে মারা, ভূমি অফিস পুড়িয়ে ফেলা। আমরা মাঠে না থাকলে তারা এটা করবে না তার গ্যারান্টি নেই। আমরা ক্ষমতায়, আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। তারা ক্ষমতায় থাকতে আমাদের দাঁড়াতেই দেয়নি। আর রাস্তায় ফখরুল সাহেবরা বের হচ্ছেন, কর্মসূচি পালন করছেন; আমাদের কেউ তো কিছু বলছে না। আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা তো তাদের হচ্ছে না।

Link copied!