সাগর নন্দিনি-২: দুই বিস্ফোরণে পুলিশসহ দগ্ধ ১৯, মোট মৃত্যু ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ৪, ২০২৩, ০৩:৩২ পিএম

সাগর নন্দিনি-২: দুই বিস্ফোরণে পুলিশসহ দগ্ধ ১৯, মোট মৃত্যু ৪

সংগৃহীত ছবি

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বিস্ফোরিত হওয়া তেলবাহী জাহাজ ‘সাগর নন্দিনী-২’ থেকে তেল অপসারণের সময় আবারও বিস্ফোরণ ঘটলে দুই বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশসহ মোট ১৯জন দগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫ জনই পুলিশের সদস্য ও দুইজন জাহাজের কর্মচারী। আর মারা গেছেন ৪ জন।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর তেল অপসারণের সময়ে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণে পুলিশ সদস্যরা আহত হন।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন-কনস্টেবল শওকত, দ্বীপ, পলাশ মোল্লা, মেহেদী, নকীব, সাইফুল, লিপন গাইন, এএসআই গণেশ, এসআই আব্দুলদ হাকিম, নায়েক সিদ্দিক, এসআই মোস্তফা কামাল, কাইয়ুম, শওকত মীর, হালীম খান ও এটিএসআই হেলাল উদ্দিন।

এছাড়া জাহাজের যে দুইজন কর্মচারী দগ্ধ হয়েছেন তাদের একজন হলেন-সুকানী শরিফ আহমেদঅ অন্যজনের নাম জানাতে পারেনি ঝালকাঠি থানা পুলিশ। তবে দগ্ধ হওয়া ওই ব্যক্তি জাহাজের বাবুর্চি বলে জানা গেছে।

এদিকে, ঝালকাঠি থানা পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।  এছাড়া গুরুত্বর আহত শরীফকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ১১ জন ঝালকাঠি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঝালকাঠি থানা পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে নোঙর করে থাকা অবস্থায় ১ জুলাই প্রথম দফায় বিস্ফোরিত সাগর নন্দিনি-২ জাহাজ থেকে সাগর নন্দিনি-৪ জাহাজে তেল অপসারণ করা হচ্ছিল। এসময়ে দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরিত হয় সাগর নন্দিনি-২।

পরে ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড, বিআইডব্লিউটিএর ১১টি ইউনিট আগুন মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক ফিরোজ কুতুবী এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই দুপুরে ১১ লাখ লিটার তেল নিয়ে ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীতে নোঙর করা অবস্থায় সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুরো জাহাজে আগুন লেগে যায়। এ সময় ট্যাংকারটির মাস্টার কক্ষসহ পেছনের অংশটি উড়ে গিয়ে নদীর মধ্যে ডুবে যায়। জাহাজে থাকা মোট ৯ জনের মধ্যে পাঁচজন আহত ও দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হলেও চার জন নিখোঁজ থাকেন। পরে দুই দিন অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

১ জুলাই বিস্ফোরণের প্রথম দিনেই নিহত হন জাহাজের গ্রিজারম্যান আব্দুস সালাম হৃদয় ও ড্রাইভার সারোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিন সকাল পৌনে ১১টার দিকে জাহাজের সুপারভাইজার মাসুদুর রহমান বেলালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর বেলা সোয়া ১২টার দিকে মাস্টার ইনচার্জ রুহুল আমিনের মরদেহ উদ্ধার হয়।

Link copied!