সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকার ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১৪, ২০২১, ০৯:০৮ পিএম

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকার ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল

দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা রক্ষায় বর্তমান সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুমিল্লার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার সরকারের চক্রান্ত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর)রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আয়োজক  সংগঠনের সভাপতি নূর আফরোজ খান জ্যোতির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়  অন্রদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।

কুমিল্লায় দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপে সংঘটিত অনভিপ্রেত ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখতে এ সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। হিন্দু ভাইদের যে দূর্গা পূজা হচ্ছে, সেখানে কতগুলো অনঅভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনার জেরে চাঁদপুরের তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার যে চক্রান্ত সেটা এই সরকারের চক্রান্ত। তারা এই দেশে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়। আমরা এই সব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সাথে প্রকৃত অপরাধীকে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কুমিল্লার পূজামণ্ডপে যারা এ কাজ করেছে তারা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যই করেছে। দেশে স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্যই করেছে। একইভাবে আবার নির্বিচারে গুলি করেছে। সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য, আসল জায়গা থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে নেয়ার জন্য এইসব ঘটনা তারা ঘটায়।’

আবারও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয়  নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন,  বর্তমান দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো নিরেপক্ষ নির্বাচন সম্ভব না। সরকার যদি নিরেপক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা না করে, তাহলে নির্বাচন নিরেপক্ষ হবে না। এজন্য আমরা পরিস্কারভাবে বলেছি আগে পদত্যাগ কর, নিরেপক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দাও। তারা নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তারা (সরকার) তা করবে না। আমাদের কথা পরিস্কার, নির্বাচন নির্বাচন খেলা আর হবে না।’

বিএনপি গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোন গণতন্ত্র? তাদের গণতন্ত্র হচ্ছে আমরা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকব আর তোমরা সারাজীবন ধরে প্রজা হয়ে থাকবা। এটাই হচ্ছে তাদের গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্য।

জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজনৈতিক কর্মসূচী বন্ধ ঘোষণার প্রতিক্রিযায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,  আওয়ামী লীগ পরিকল্পনাভাবে সব জায়গা সংকুচিত করে ফেলেছে। আগে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে আমরা সভা সমাবেশ করতাম, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেটাকে স্টেডিয়াম করে দিল। এরপর মুক্তাঙ্গনও বন্ধ করে দিল। প্রেসক্লাবের সামনে ছোট একটা জায়গা, সেখানেও বন্ধ করে দেয়া হল। এইভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে না।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসকরা অত্যন্ত চিন্তিত জানিয়ে দলের মহাসচিব আরও বলেন,  ‘গতকাল(১৩ অক্টোবর) বিকেলে আমি দেশনেত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা অত্যন্ত চিন্তিত। কারণ তার সামগ্রিক যে চিকিৎসা আছে, যেগুলো অ্যাডভান্স সেন্টার ছাড়া এখানে সম্পন্ন হবে না। তারপরও চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন।’ 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে কারণে আমরা বারবার বলছি- খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। আপনারা (সরকার) তো প্রতিহিংসামূলকভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জোর করে তাকে আটকে রেখেছেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপি সরকারের কাছে কোনো দয়া চায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার- জামিন খালেদা জিয়ার পাপ্য। এই মামলাতে তিনি অবশ্যই জামিন প্রাপ্য। তাকে জামিন দিতে হবে এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। এটাই জনগণের দাবি। এই দাবি আমাদের আদায় করতে হবে।

Link copied!