বেটা
নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৩:১৪ এএম
আমার ছেলের শরীরে এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গাও নেই যেখানে পেটানো হয়নি-এ কথা বলেই থানার সামনে আহাজারি করছিলেন নিহত যুবক রানা মিয়ার (৩০) বাবা দরিদ্র বাবা আমিরুল ইসলাম।
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি 'চুরির ঘটনা'য় স্থানীয় ভাঙারি ব্যবসায়ী শিপন মিয়াসহ আরও কয়েকজন রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এই অভিযোগে মামলা করেছেন রানার বাবা আমিরুল ইসলাম।
রবিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছেলের মরদেহ নিয়ে থানায় এসে মামলাটি করেন তিনি। আমিরুলের বাড়ি উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে।
আমিরুল গণমাধ্যমকে বলেন, 'বারবার আমি তাঁদের পায়ে ধরে ছেলেকে মাফ করে দেওয়ার কথা বললেও তাঁরা ছাড়েনি। তাঁরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে বুকের পাজর, দুই হাত-পা ভেঙে ফেলেছে। তারা আমার ছেলেকে মেরেই ফেললো। আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা নেই যেখানে পেটানো হয়নি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই, সঠিক বিচারের আশায় হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে সরাসরি থানায় এসেছি।'
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আজ রবিবার দুপুরে নিহতের বাবা ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার আসামীরা হলেন, স্থানীয় ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের শিপন মিয়া (২৫), আকাশ মিয়া (২২), উজ্বল মিয়া (২৫) ও ইমন (২৬) এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জন।
আমিরুল ইসলাম জানান, মামলার প্রধান আসামি শিপন ভাঙ্গারির ব্যবসা করে। তাঁর ১৫টি ভ্যান গাড়ি আছে। কয়েকদিন আগে ৫টি ভ্যানগাড়ি চুরি হয়।
শনিবার ভোর রাতে ভ্যানগাড়ি চুরির অভিযোগে রানা মিয়াকে আটকে রাখে শিপন। পরে তাঁকে পিটিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনটি ভ্যানগাড়ি চুরির কথা স্বীকার করেন রানা। সে সময় স্থানীয়রা রানাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও তাঁকে এক নাগাড়ে পেটাতে থাকেন অভিযুক্তরা।
পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ছেলেকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান আমিরুল ইসলাম। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করেন।
