গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১০, ২০২১, ০৭:৪১ পিএম

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’!

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ১০০ বিঘা আয়তনের ধানখেতে ফুটিয়ে তোলা ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ পরিদর্শন করেছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধিদল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শস্যচিত্রে এটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ চিত্রকর্ম। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা।

পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানিয়েছেন, শস্যখেতের বিশাল ‘ক্যানভাসে’ ফুটিয়ে তোলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নান্দনিক প্রতিকৃতিটি বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের দুই সদস্য হলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী।

তারা মঙ্গলবার বগুড়ার শেরপুরে আমিনপুর মাঠে প্রতিকৃতি স্থল পরিদর্শন শেষে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বর্তমানে চীনের ৭০ বিঘার শস্যচিত্রের রেকর্ড ভাঙার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

গিনেস ওয়ার্ল্ডের প্রতিনিধিরা বলেন, এর আগে বৃটেন, জাপান, ভারত ও চীনের রেকর্ড ভঙ্গ করে বাংলাদেশের এই চিত্রকর্ম বিশ্বে প্রথম স্থান করে নেবে। তারা এর সকল শর্ত পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে এবং বেসরকারি কোম্পানি ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সহযোগিতায় ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ নামে বিশাল আয়তনের এই প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে।

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শিল্পকর্মের আয়তন ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। শস্যচিত্রের দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার এবং প্রস্থ ৩০০ মিটার। যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র। সর্বশেষ ২০১৯ সালে চীনে তৈরি শস্যচিত্রটির আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট।

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি তৈরি করার জন্য দুই ধরনের ধান বেছে নেয়া হয় গাঢ় বেগুণী ও সোনালী রঙ। চীন থেকে এই ধানের জাতটি আমদানি করা হয়েছে। প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিক পরিচর্যার কাজ করছে। এর আগে প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক এই চারা রোপণ কাজ করেছেন। ইতিমধ্যেই ১০০ বিঘা জমিতে রোপনকৃত ধানের চারায় ফুটে উঠেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবয়ব।

মাঠে দুই ধরনের ধানের চারা রোপণের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে আঁকা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। যা আরও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিরলসভাবে কাজ করছেন। কেউ আগাছা পরিস্কারে ব্যস্ত আবার কেউ ব্যস্ত সেচ দেয়ার কাজে।

ইতোমধ্যে শস্যচিত্রে ভেসে উঠেছে জাতির পিতার অবয়ব। তবে খালি চোখে শস্যচিত্রটির পূর্ণাঙ্গ রুপ দেখা সম্ভব না হলেও ১০০ বিঘা জমিতে রোপনকৃত ধানের দৃশ্য ড্রোনে ধরা পড়ছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই শস্যচিত্রটি দেখতে স্থানীয়দের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা অনেকেই ভিড় করছেন ।

গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ও উচ্চ ফলনশীল দুই ধরণের ধানের চারা রোপনের মাধ্যমে এই কর্মযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বাযক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এতে সভাপত্বি করেন।

গত সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বাযক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এই চিত্রকর্মটি দেশের ১৭ কোটি মানুষকে জাগ্রত করে তুলবে। ইতোমধ্যে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ চিত্রকর্মটি প্রতিদিনই রঙ বদলাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটি পূর্ণতা পাবে। এর শস্য কেটে নিলেও থেকে যাবে চিত্রকর্মের চিহ্ন।

জাতির জনকের জন্মশতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতেই কৃষিবিদ ও প্রকৌশলীদের যৌথ পরিকল্পনায় কৃষি ও কৃষকের বঙ্গবন্ধুর বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রতিকৃতি তৈরির এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে বলেও মন্তব্য করেন।

Link copied!